সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে বেধড়ক মার খেয়েছে ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) অফিসাররা। ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। তবে এখনও শাহজাহানের নাগাল পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে জবাব তলব করেছেন খোদ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শাহজাহানকে কার্যত 'গরুখোঁজা' খুঁজছে ইডি। কিন্তু বেপাত্তা সন্দেশখালির ওই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সন্দেশখালি এলাকায় শাহজাহানের তিনটি প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে। গত শুক্রবার তার একটিতে গিয়েই আক্রান্ত হন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আধিকারিকেরা। সাদা রঙের একটি দোতলা বাড়িতে থাকেন শাহজাহানের কয়েকজন আত্মীয়। নীল রঙের একটি বাড়িতে থাকেন তাঁরই কিছু ঘনিষ্ঠ লোকজন। আর হলুদ রঙের বাড়িতে থাকেন খোদ শাহজাহান। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তিনটি বাড়িতেই তালা ঝুলছে।
ইডি সূত্রে খবর, শাহজাহানের প্রথম লোকেশন মিলেছিল সরবেড়িয়া গ্রামেই। পরে সেখান থেকে দ্বিতীয় লোকেশন পাওয়া যায় সন্দেশখালি। হিঙ্গলগঞ্জেও কয়েক ঘণ্টা তাঁর মোবাইলের লোকেশন মিলেছিল বলে খবর। রবিবার ফের তাঁর লোকেশন ট্র্যাক করা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী অঞ্চলের ৮ নম্বর কুমড়োখালি এলাকায়। সেখান থেকে জীবনতলা হয়ে কোথাও গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন তিনি। রবিবার ছিল বাংলাদেশে ভোট। সীমান্ত সিল রয়েছে দুই দেশেই। সেখানে রয়েছে কড়া পাহারা। ভোট মিটলে শাহজাহান জলপথে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে অনুমান করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
শাহজাহানের এলাকা বাংলাদেশ সীমান্তে। তাঁর ডেরা থেকে সীমান্তের দূরত্ব ১০-১৫ কিলোমিটার। রেশন দুর্নীতি টাকা বাংলাদেশে পাচার করতেন তিনি, এমনটাই অভিযোগ উঠছে। ইডি সূত্রে দাবি, প্রায় ৫০-৬০ কোটি টাকা শাহজাহানের বাড়িতে ছিল। সেকারণেই শুক্রবার সকালে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল তারা। সে দিন বাড়িতে ঢুকতে পারলে, বিপুল নগদ টাকার পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র পাওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। তাই ইডিকে আটকাতে এত মরিয়া ছিলেন শাহজাহান। গত দু’দিনে সেই টাকা, অস্ত্র এবং অন্য নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।