শেষ পর্যন্ত পরিবারের দাবি মেনে কল্যাণী AIIMS-এ ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে মৃত নার্সের। মৃত নার্সের ময়নাতদন্ত কোথায় হবে, তা নিয়ে শুক্রবার গোটা দিন ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিবারের অভিযোগ, শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও তাদের জানানো হয়, ময়নাতদন্ত হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে তাদের আস্থা নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন মৃতার দাদা। বলা হয়, তাঁরা ময়নাতদন্ত চান সরকারি হাসপাতালে।
পরিবারের দাবি মেনে শনিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে নার্সের দেহ গ্রিন করিডর করে কল্যাণী AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হয়। আগেই ময়নাতদন্ত নিয়ে কল্যাণী AIIMS-এর ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগে যোগাযোগ করেন হুগলি জেলার গ্রামীণ SP। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলার পরই নিয়ে যাওয়া হল নার্সের দেহ।
সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে মৃত ওই তরুণী নন্দীগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। মাত্র ৪ দিন আগেই সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমে তিনি কাজে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর বুধবার রাতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় নার্সিংহোমেরই একটি ঘর থেকে। মৃতার বাবা বলেন, 'শুক্রবার সকালে হুট করে আমাকে নিয়ে আসে। প্রচুর পুলিশ চলে আসে। মারধর করে আমার স্ত্রী, পুত্রকে। ওদেরও জোর করে তুলে আনে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আমি বলেছিলাম মেডিক্যাল কলেজে যাব না। এখানে কমান্ড আছে, AIIMS আছে। না হলে শ্রীরামপুরে ময়নাতদন্ত হলেও আমি সন্তুষ্ট হতাম। মেডিক্যালে আমি চাই না হোক। তাহলেসঠিক তদন্ত পাব না।' এরপর শুক্রবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পুলিশ পৌঁছলে দফায় দফায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে SFI ও BJP। সন্ধে পর্যন্ত চলে দীর্ঘ টালবাহানা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের ডিসি কন্ট্রোল। তিনি জানান, আদালত যা বলবে সেইমতোই হবে ময়নাতদন্ত। অবশেষে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের তরফে লিখিত আবেদন জানানো হয় কল্যাণী AIIMS কর্তৃপক্ষকে। রাতেই রাজি হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ঘটনায় সিঙ্গুর থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের চন্দননগর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে। ধৃতরা হলেন নার্সিংহোম মালিক সুবীর ঘোড়া ও রাধাগোবিন্দ ঘটন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, ধৃত রাধাগোবিন্দ ঘটনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নিহত নার্সের।