Advertisement

Matua Community: SIR, CAA এবং... মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ফিরতে পারে TMC-তে?

নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগের জন্যই মহা ফাঁপড়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজ। এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলি আদতে হিন্দু। তারা বাংলাদেশে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন। তারপর বানিয়েছেন রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড। কিন্তু SIR হওয়ার ফলে ভোটার তালিকায় নাম থেকেও এখন লাভ নেই। নতুন করে সব প্রমাণ দিতে হবে। নইলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে সিএএ-এর মাধ্যমে। তাহলেই ভোট দেওয়া যাবে।

মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কমতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 27 Nov 2025,
  • अपडेटेड 9:42 AM IST
  • নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগের জন্যই মহা ফাঁপড়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজ
  • এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলি আদতে হিন্দু
  • তারা বাংলাদেশে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের পারদ ইতিমধ্যেই চড়তে শুরু করে দিয়েছে। আর এবার কোনও রাজনৈতিক দল নয়। বরং ভোটের ঢাকে কাঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের উদ্যোগেই বঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এর মাধ্যমে তারা মৃত ভোটার, স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত ভোটার এবং জাল ভোটারদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।

আর নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগের জন্যই মহা ফাঁপড়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজ। এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলি আদতে হিন্দু। তারা বাংলাদেশে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন। তারপর বানিয়েছেন রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড। কিন্তু SIR হওয়ার ফলে ভোটার তালিকায় নাম থেকেও এখন লাভ নেই। নতুন করে সব প্রমাণ দিতে হবে। নইলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে সিএএ-এর মাধ্যমে। তাহলেই ভোট দেওয়া যাবে।

আর অধিকাংশ মতুয়ার কাছেই নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ডকুমেন্টস নেই। ফলে তাঁরা পড়েছেন মহা বিপদে। তৈরি হয়েছে ভয়ের আবহাওয়া। আর এমন সময় ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি। একদল বলছে এসআইআর-এর মাধ্যমে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। পাঠানো হবে ডিটেনশন ক্যাম্পে। অন্য দল আবার সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিক বানানোর কথা বলছে। তারপর ভোটাধিকার মিলবে বলে দেওয়া হচ্ছে আশ্বাস।

তৃণমূল কী বলছে?

এসআইআর প্রক্রিয়ার প্রথম থেকেই বিরোধীতা করছে তৃণমূল। এই প্রক্রিয়ার ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা সকল হিন্দু উদ্বাস্তুদের সমস্যা হবে বলেও জানান হয়েছে। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে বলেও দাবি করেছেন তারা।

এমন পরিস্থিতিতে মতুয়া সমাজের মন পেতে ঠাকুরনগরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি সভা করেন। সেই সভায় মতুয়া সমাজের পাশে থাকার বার্তা দেন। পাশাপাশি সিএএ-তে অ্যাপ্লাই করতে বারণ করেন।

তাঁর যুক্তি, সিএএ-তে অ্যাপ্লাই করার অর্থ হল আপনি দেশের নাগরিকই নন। আর এই কারণে দেশে থাকার অধিকার চলে যেতে পারে। তাই তিনি এবং তাঁর দল এর বিরোধীতা করেন। এভাবেই তিনি নিজের দিকে আনতে চাইছেন মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক। পেরতে চাইছেন ভোটের বৈতরণী। কারণ, তিনি জানেন যে অন্তত বিধানসভায় ৩০টি এমন সিট রয়েছে, যেটা সরাসরি মতুয়াদের দ্বারা প্রভাবিত। আর সেই সব সিটে তৃণমূল খুব একটা ভাল ফল করে না। আর সেখানে তিনি জোড়াফুল ফোটাতে উদ্যোগী হয়েছেন এ বার। যদিও তাঁর এই স্ট্র্যাটেজি আদৌ কতটা কাজে দেবে, সেটা এখনও বলার সময় আসেনি।

Advertisement

বিজেপির কী দাবি?

মাথায় রাখতে হবে, এসআইআর চালু হওয়ার পর মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপিও। তাদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে সিএএ ক্যাম্প (সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট)। এর মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের প্রথমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তারপর তাদের ভোটার তালিকায় নাম তুলে দেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে।

আর এই বিষয়টা নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে প্রথম সারির সব নেতারাই।

মতুয়া বাড়ির অন্দরে কী চলছে?

এই পরিস্থিতিতে ভাগ হয়ে গিয়েছে মতুয়া ঠাকুরবাড়ি। একদিকে রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। অন্যদিকে আবার রয়েছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।

মমতাবালা প্রথম থেকেই এসআইআর-এর বিরোধীতা করছেন। এমনকী তিনি এই কারণে অনশনও করেছেন। আবার অপরদিকে রয়েছেন সুব্রত ঠাকুর। তিনি এসআইএর-এর সমর্থনে যতদূর করা সম্ভব করে চলেছেন। তিনি মতুয়া আইডেন্টিটি কার্ড বিলি করছেন। সিএএ ক্যাম্প চালাচ্ছেন। পাশাপাশি ভোটার তালিকায় নাম তুলে দেওয়ার দিচ্ছেন আশ্বাস।

পরিস্থিতি কী?

এমন পরিস্থিতিতে একটা সহজেই বলা যায় যে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ককে বাগে আনতে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলই উঠে পড়ে লেগেছে। আর তাদের দুইজনের হাতিয়ার ভয়। এখানে তৃণমূল এসআইআর এবং সিএএ-এর বিরোধীতায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার ভয় দেখাচ্ছে। অন্যদিকে আবার বিজেপি নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। অর্থাৎ যারা ইতিমধ্যেই দেশে এতদিন রয়েছে, তাদের ভয় দেখিয়ে আবার নাগরিক করানোর চেষ্টায় রয়েছে তারা বলে অভিযোগ। আর এই দুই দলের মধ্যে পড়ে মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ এখন দিশেহারা। তারা বুঝতে পারছেন না ঠিক কী করা উচিত।

তাই এখন দেখার ২০২৬ সালে তৃণমূল না বিজেপি এই পরিস্থিতির লাভ তুলতে পারে। মতুয়া গড়ে কাদের গেরুয়া না সবুজ পতাকা ওঠে। তবে সেই উত্তর পেতে চাইলে আপনাকে কিছুটা সময় অপেক্ষা করতেই হবে।

Read more!
Advertisement
Advertisement