
SIR-এ কি আধার কার্ড নথি হিসেবে মান্যতা পাবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল। পাশাপাশি সাংবাদিকদের আরও একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। যেমন কোনও নথি না থাকলে কী হবে, বাইরে কোনও ভোটার থাকলে তাঁর নাম তালিকায় কীভাবে উঠবে ইত্যাদি।
প্রশ্ন - SIR-এর জন্য কি আধার কার্ডকে নথি হিসেবে ধরা হবে?
মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক : 'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আধার কার্ডকে ১২ তম নথি হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে। এর আগে ১১টি নথির কথা বলা আছে। আধার কার্ডকে পরিচয়পত্রের প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে। তবে নাগরিকত্বের প্রমাণ সেটা নয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আধারকে আধার আইনের ৯ নম্বর ধারা মোতাবেক ব্যবহার করতে হবে৷'
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছিলেন, 'আধার নাগরিকত্ব ও ঠিকানার যথার্থ প্রমাণ নয়। সুপ্রিম কোর্ট আগেই বলে দিয়েছে, আধার কার্ডের ব্যবহার আধার আইন ধরেই হবে। আর আধার আইনে ৯নং ধারায় এটা স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, যে আধার কখনওই জন্ম ও ডোমিসাইল বা ঠিকানার প্রমাণ নয়। এটা শুধু পরিচয়পত্র হিসাবে কাজ করে। তাই সেই নিয়ম মেনেই আধারকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।'
প্রশ্ন : উত্তরবঙ্গে বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও তথ্য হারিয়ে গেলে তিনি কী করবেন?
মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক : এই বিশষয়ে জেলাশাসকরা তৎপর আছেন। তাঁরা সব তথ্য দিয়েছেন। যদি কেউ ৫০ বছর আগের নথি দেখতে চান, সেটাও দেখতে পারেন। রাজ্য সরকারের কাছে সব আছে।
প্রশ্ন : SIR নিয়ে BLO দের কোনও সমস্যায় পড়তে হলে সেক্ষেত্রে কী করণীয়?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : সেটা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। আইন শৃঙ্খলা দেখা রাজ্যের কাজ। তারাই যথাযথ পদক্ষেপ করবে।
প্রশ্ন : এর আগে SIR করতে ২ বছর সময় লেগেছিল। এখন ২ মাসে কীভাবে সম্ভব?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য বিহারেও তো SIR হয়েছে। ওখানেই প্রায় পশ্চিমবঙ্গের মতো ভোটার। সেখানে তো অসুবিধা হয়নি। বিহারেও কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। সফটওয়্যার ছিল না। সম্পূর্ণ তালিকা ছিল না। তারপরও তারা করতে পেরেছে। আমাদের কর্মীরা দক্ষ। তাহলে আমরা কেন করতে পারব না? আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। গত কয়েকমাস ধরেই কাজ হচ্ছে।
প্রশ্ন : যারা বাইরে থাকে তাঁদের কী হবে? অর্থাৎ কেউ যদি কলকাতায় কাজ করেন, বাড়ি হুগলিতে সেক্ষেত্রে কী হবে?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : অনলাইন ও অফলাইন দুটো অপশনই আছে। অনলাইনে যে কোনও জায়গা থেকে উনি ফর্ম ফিলাপ করতে পারবেন। অফলাইনে চাইলেও অপশন আছে। বিএলওরা তো বাড়িতে একাধিরবার যাবেন। সেক্ষেত্রে বাড়িতে থাকা ফর্ম ফিলাপ করলেই চলবে।
প্রশ্ন : ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকেই কেন আধার করা হচ্ছে?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : ভারতীয় সংবিধানে ভোটার তালিকা প্রস্তুত নিয়ে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে, তার উপর ভিত্তি করেই এসব কাজ করা হচ্ছে। স্বচ্ছ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য কমিশন নিয়ম মেনে কাজ করবে।
প্রশ্ন :অনাথদের ক্ষেত্রে কী হবে?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : সেজন্য নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন আছে। সেই মোতাবেক কাজ হবে। সেজন্য জেলয় জেলায় আধিকারিকরা কাজ করছেন।
প্রশ্ন : সর্বদলীয় বৈঠকে কি আপনি সন্তুষ্ট?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : সব নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই সাহায্য করবেন। নেতারা যদি কেউ কিছু বলে থাকেন বা বিএলও দের সমস্যা হয় তাহলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। কারণ, আমাদের পুলিশ সক্ষম ও দক্ষ। রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা আছে। তাদের অবিশ্বাসের তো কোনও কারণ নেই।
প্রশ্ন : এত অফিসার বদলি হওয়ার ফলে কি SIR এ ক্ষতি হবে?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : এতে কোনও সমস্যা হবে না। গোটাটা একটা প্রক্রিয়া। নতুন জায়গায় যারা আসবেন তাঁদেরও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ,তাঁরা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। আর প্রয়োজনে নিজেদের দ্রুত তৈরি করে নেবেন।
প্রশ্ন : এখন কি ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : না এখন আর যাবে না। কারণ ভোটারলিস্ট তো ফ্রিজ হয়েছে। আগে ড্রাফট তালিকা প্রকাশিত হবে। তারপর আবেদন করা যাবে। বিএলও যাওয়ার পর ফর্ম সিক্স দেবে।
প্রশ্ন : প্রত্যন্ত এলাকার ভোটাররা SIR বুঝতে না পারলে কী করবেন?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : সেক্ষেত্রে চিন্তার কোনও কারণ নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএলও সেই এলাকার ভোটারদের নিয়ে সব তথ্য জানেন। সেজন্য অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।
প্রশ্ন : SIR নিয়ে অনেকে আতঙ্কিত, কী বলবেন?
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক : আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সরকারের আর পাঁচটা কাজের মতো এটাও একটা কাজ। এর আগেও হয়েছে। ২০০২ সালেও হয়েছে। বিহারের মানুষও অংশগ্রহণ করেছেন। বিএলওরা বাড়িতে যাবেন। পরিযায়ী শ্রমিকরা কিউআর কোডে করতে পারবেন।