শুভস্য শীঘ্রম। রবিবারই ভোটার তালিকা 'ঝাড়াই-বাছাই'য়ের কাজে বেরিয়ে পড়লেন সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লাভলী মৈত্র। সঙ্গে ছিলেন রাজপুর সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব কুমার দাস। দলীয় কর্মীদের নিয়ে রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার তালিকা-সহ বাড়ি বাড়ি যান তাঁরা।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমাফিকই ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করতে হবে, বললেন লাভলী মৈত্র। সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভায় মোট ৩০০টি বুথ রয়েছে। লোকসভা ভোটের নিরিখে ভোটার বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। তাঁরা সকলেই বৈধ ভোটার কিনা প্রতিটি বুথে বুথে গিয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান লাভলি মৈত্র।
যদিও এদিন বেশ কয়েকটি বুথে খতিয়ে দেখা হলেও কোনও ভুয়ো ভোটার পাওয়া যায়নি। লাভলী মৈত্র বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি বুথে যাচাই করা হচ্ছে। ভোটার তালিকায় কোনও অসঙ্গতি থাকলে তা দ্রুত সংশোধন করা হবে।
এদিন শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনারও নিন্দা করেন লাভলী মৈত্র। তিনি বলেন, যারা হামলা চালিয়েছেন তারা ছাত্র নয়, গুন্ডা। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোনারপুরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করা হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। মিছিলে অংশ নেন দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি সংসদে প্রায় ৪,৫০০ বাড়তি ভোটার পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসিতবরণ মণ্ডল জানান, প্রশাসনের নির্দেশমাফিক তাঁরা ভোটার তালিকা ‘স্ক্রুটিনি’ করছিলেন। সেই সময়ই দেখা যায়, ২২টি সংসদেই অসংখ্য ‘ভূতুড়ে’ ভোটার। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা— শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, মালদহ থেকে প্রচুর ভোটারের নাম রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই অঞ্চলের ভোটার তালিকায়। ভোটার তালিকায় ওঠা ওই নামের পাশে থাকা ফোন নম্বরে ডায়াল করে চেক করা যায়। দেখা যায়, এরা কেউ দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসিন্দাই নন।
এই বিষয়ে নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের কর্মীসভায় বলেন, 'অমিত শাহের অধীনস্থ সমবায় দফতরের প্রধান সচিব পদে কাজ করেছিলেন(উনি)। আমি এক সময় কমিশনকে শ্রদ্ধা করতাম। এখনও করি। নির্বাচন কমিশনার পদে কাকে বসিয়েছে জানেন? টোটালটাই বিজেপির লোক'।
এদিকে এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, 'নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমস্ত সীমা পার করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভিত্তিহীন অভিযোগ সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। প্রকাশ্যে মিথ্যে অভিযোগ করে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে'।
সংবাদদাতাঃ প্রসেনজিৎ সাহা