'শিলিগুড়ি মডেলকে' সামনে রেখে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে একের পর এক ভোটে লড়েছে বামেরা। তবে ভোটযুদ্ধে সেই জোট তেমন একটা দাগ কাটতে পারেনি। উল্টে বারবার হয়েছে ভরাডুবি। কমতে থেকেছে ভোটের হার।
ভরাডুবি হয় ২০২১-এ
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় ফল করে জোট। সেই ভোটে একটাও আসন পায়নি তারা। ফলে আপাতত বিধানসভায় একজন প্রতিনিধিও নেই জোটের।
এমনকী ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ফলও হয় খুবই খারাপ। বামেরা এবারও শূন্য। আর কংগ্রেস পায় মাত্র ১টি আসন। এই ভোটগুলিতে বাম-কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে বিজেপি-কে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে বেছে নেয় বাংলার মানুষ।
আর বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতটা মোড় নেওয়ার পরই জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। এমনকী বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও ২০২৬ সালের ইলেকশনে ২৯৪টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পক্ষে সওয়াল করেছেন।
তাই জোটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে শুভঙ্করবাবুকে ফোন করে বাংলা.আজতক.ইন। তিনি আমাদের বলেন, 'বাংলার কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। কংগ্রেস শক্তিশালী হলেই বাংলায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসার উন্নতি হবে। তাই সবার প্রথমে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করাই লক্ষ্য।'
জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর উত্তর, 'আগে নিজেকে শক্তিশালী হতে হবে। ২৯৪টি আসলে লড়াই করার মতো জায়গায় যেতে হবে। তাহলেই তো অন্য কেউ পাশে এসে দাঁড়াতে চাইবে। অথবা আমরা অন্য কারও পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারব। তাই সবার প্রথমে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।'
এই নিয়ে কী বলছেন সুজন?
একই বিষয়ে নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে ফোন করা হয় সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে। তিনি বলেন, 'আমরা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী শক্তিকে পাশে নিয়ে ভোটে যেতে চাই। তাহলেই বাংলার মানুষের আশা পূরণ হবে।'
যদিও জোট প্রসঙ্গে সরাসরি তিনি কিছুই বলতে চাননি। এই বিষয়টি সময়ের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন।
তাই এখনই জোট নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় আসেনি। বরং এখন একটু অপেক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে ঠিক কোন দিকে এগোয় পরিস্থিতি। তারপরই জোট সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে।
জোট নিয়ে ব্যাঙ্গ করছে তৃণমূল, বিজেপি
বাম-কংগ্রেসের এই জোট নিয়ে বরাবরই ব্যাঙ্গ করে এসেছে তৃণমূল। বিশেষত, ২০২১ ও ২৪-এর ভোটের পর সেই টিপ্পনি আরও বেড়েছে।
ওদিকে এই জোটকে ভোট কাটার 'কল' বলে মনে করে বিজেপি। তাদের মতে, এই জোটই বিজেপি-এর ভোট কেটে নেয়। যার ফলে তৃণমূল দিনের পর দিন ক্ষমতায় বলে অভিযোগ তাঁদের। তাই বারবার তারাও এই জোটকে আক্রমণ করতে পিছপা হন না।