দু-একদিনের জন্য বাঙালির কাছেপিঠে ঘুরতে যাওয়ার অন্যতম পছন্দের জায়গা হল সুন্দরবন। কম খরচে সুন্দরবনে জঙ্গলের মাঝে কয়েকটা দিন কাটাতে মুখিয়ে থাকেন অনেকেই। সেই সুন্দরবনে এবার ঘুরতে গেলে বেশি টাকা খরচ করতে হবে পর্যটকদের। কারণ, ১ সেপ্টেম্বর থেকেই সুন্দরবন ভ্রমণের খরচ বাড়ছে। ইলিশ উৎসবের ভরা মরশুমের মধ্যেই বাড়ল খরচের বহর।
পর্যটকদের মাথাপিছু অনুমতি মূল্য থেকে শুরু করে লঞ্চ, ভুটভুটির অনুমতি মূল্য যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনই লঞ্চ, ভুটভুটির বার্ষিক পঞ্জীকরণের মূল্যও বাড়ানো হয়েছে এক ধাক্কায় অনেকটাই। এই বাড়তি ভাড়া আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে। এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কত টাকা ভাড়া বাড়ছে?
সুন্দরবনে গেলে আগে যেখানে পর্যটক পিছু অনুমতি মূল্য ছিল ১২০ টাকা সেখানে বর্তমানে ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৮০ টাকা। পর্যটকরা যদি নেতিধোপানী পর্যটন কেন্দ্রে যান তাহলে তাঁদের ২৪০ টাকার পরিবর্তে দিতে হবে ৩০০ টাকা। সজনেখালি ক্যাম্প, ওয়াচ টাওয়ারে উঠে পাখির চোখে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল-সহ আশপাশের এলাকা দেখতে হলে আগে দিতে হত ৩০ টাকা। এবার দিতে হবে ৫০ টাকা।
বিদেশি পর্যটকদের জন্যও খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে সুন্দরবন ভ্রমণে বিদেশি পর্যটকরা এলে তাঁদের ৫০০ টাকা দিতে হত অনুমতি মূল্য হিসেবে, সেখানে এবার থেকে দিগুণ টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি, সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য ভুটভুটি ভাড়া যেখানে ছিল ৬০০ টাকা সেটা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। লঞ্চের অনুমতি মূল্য ছিল ১০০০ টাকা, তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫০০ টাকা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ বা ভুটভুটির ক্ষেত্রেও অনুমতি মূল্য ২০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০০ টাকা করা হয়েছে। লঞ্চ বা ভুটভুটির বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন চার্জ ২০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০০ টাকা করা হচ্ছে।
গাইডদের চার্জও বাড়ানো হয়েছে অনেকটাই। আগে যেখানে গাইডদের জন্য পর্যটক দলকে ৬০০ টাকা দিতে হত, সেখানে ১ সেপ্টেম্বর থেকে দিতে হবে ৮০০ টাকা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য গাইডদের চার্জ ১৫০০ থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরবনে কোন সিনেমা বা অন্য কোনও প্রজেক্টের শ্যুটিং করতে গেলে আগের তুলনায় অনেক বেশি টাকা দিতে হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফ থেকে।
বন দফতরের দাবি, ৪ বছর পর সুন্দরবনের পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ মূল্য বাড়ানো হয়েছে। সুন্দরবনের পর্যটনস্থলগুলির রক্ষণাবেক্ষণ, যৌথ বন পরিচালন কমিটির মাধ্যমে জঙ্গল লাগয়া এলাকার উন্নয়ন সবই এই অর্থ দিয়ে হয়। পর্যটকদের আরও ভালো পরিকাঠামো উপহার দেওয়ার জন্যই এই মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে।