বিহারের পর বাংলায় হোক। দাবি শুভেন্দু অধিকারীর। বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের ভোটার লিস্ট পুনঃমূল্যায়নের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, যে ভাবে বিহারে ভোটার লিস্ট খতিয়ে দেখতে ‘Special Intensive Revision’ করা হচ্ছে, ঠিক সেভাবেই পশ্চিমবঙ্গেও তা করা হোক।
বিজেপি বিধায়ক বলেন, 'খুব ভাল পদক্ষেপ। এতে স্বচ্ছতা বাড়বে। যারা অবৈধ উপায়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা উচিত। যাঁরা জাল আধার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র দেখিয়ে নাম তুলেছেন, তাঁদের নাম বাতিল করা দরকার।'
এর আগেও বাংলায় ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নাম ওঠা নিয়ে সরব হয়েছিলেন শুভেন্দু। এদিন ফের সেই দাবিই করেন। বলেন, 'বাংলাতেও স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন হওয়া উচিত। বহু রোহিঙ্গা ভুয়ো আধার কার্ড ও বার্থ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। তাঁদের শনাক্ত করা দরকার।'
তিনি আরও বলেন, 'এদেশে শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকদেরই ভোটার তালিকায় নাম থাকা উচিত।'
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারে মোট ৭.৯৬ কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোটারকে 'এনুমারেশন ফর্ম' দেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচ রাজ্যে ঠিক এভাবেই ভোটার তালিকা যাচাই করা হবে। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, কেরল, পুদুচেরি এবং তামিলনাড়ু রয়েছে। আগামী বছর এই রাজ্যগুলিকে ভোট।
এই ইস্যুতে কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, 'কমিশন ১৯৮৭ সালের জুলাই থেকে ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে জন্মানো ভোটারদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চেয়ে চিঠি পাঠাচ্ছে। অভিভাবকদের জন্ম শংসাপত্র পর্যন্ত জমা দিতে বলা হচ্ছে।'
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'আসলে পেছনের দরজা দিয়ে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা এনআরসি থেকেও ভয়ানক। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।'
তিনি আরও জানান, এই চিঠি মূলত বিহার সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এর একটি কপি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও পাঠানো হয়েছে।
BJP নেতৃত্বের বক্তব্য, বাংলার ভোটার তালিকা থেকে যদি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম কাটা পড়ে, সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস সবচেয়ে বেশি চাপে পড়বে। শুভেন্দু বলেন, 'এতে ওদের ভোটব্যাঙ্কে বড় আঘাত লাগবে।'
বছর ঘুরলেই ভোট। নির্বাচনী আবহে ভোটার তালিকা সংশোধনে বিতর্কে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনা রাজ্য রাজনীতিতে। নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে এই বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়া নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় এখন সেটাই দেখার।