পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে ভাড়াবাড়িতে তরুণী চিকিৎসকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতার নাম শালিনী দাস (৩২)। পেশায় একজন অ্যানেস্থেসিস্ট, তিনি কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বাড়ি কলকাতার দমদম এলাকায় হলেও কাজের সূত্রে মাকে সঙ্গে নিয়ে তমলুকে থাকতেন।
কী ঘটেছিল সেই দিন?
শুক্রবার সকালে, প্রতিদিনের মতোই কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শালিনী। প্রথমে গিয়েছিলেন মহিষাদলের একটি নার্সিংহোমে, পরে সেখান থেকে তমলুক শহরের আরেকটি নার্সিংহোমে যান। সেখানেই অপারেশন থিয়েটারে কাজ করার সময় হঠাৎ কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন তিনি। উপস্থিত সহকর্মীদের পরামর্শে, তিনি নিজেই নিজের হাতে স্যালাইনের চ্যানেল বসিয়ে ইনজেকশন নেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সুস্থ বোধ করায়, তিনি দুপুর নাগাদ বাড়ি ফিরে আসেন। ফিরে গিয়েই সোজা বাথরুমে ঢোকেন। কিন্তু এরপর যা ঘটেছে, তা রীতিমতো চমকে দিয়েছে পরিবারকে।
অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়
বাড়ির পরিচারিকা প্রথম লক্ষ্য করেন, বাথরুমের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন শালিনী। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ডাকেন তাঁর মা কবিতা দাস। দ্রুত তাঁকে প্রথমে পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং পরে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা শালিনীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কীভাবে মৃত্যু? উঠছে একাধিক প্রশ্ন
ঘটনার সময় শালিনীর হাতে স্যালাইনের চ্যানেল লাগানো ছিল, যা ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এটা কি স্বাভাবিক চিকিৎসাজনিত কোনও প্রতিক্রিয়া, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য?
এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে তমলুক থানার পুলিশ। ঘটনার সময় শালিনী বারবার ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের এক কর্তা। পুলিশ ইতিমধ্যেই শালিনীর ফোন রেকর্ড, নার্সিংহোমে তাঁর গতিবিধি, ওষুধ প্রয়োগ সংক্রান্ত তথ্য এবং পরিবারের বক্তব্য সংগ্রহ করছে।
এলাকায় শোকের ছায়া
তরুণ, কর্মঠ ও প্রতিশ্রুতিশীল চিকিৎসকের এমন মৃত্যুতে শোকাহত সহকর্মী ও স্থানীয়রা। দুবছর ধরে তমলুক জেলা হাসপাতাল এবং আশেপাশের নার্সিংহোমে প্র্যাকটিস করছিলেন তিনি।