রাজ্য জুড়ে শীতের আমেজ। এই আবহে রাজ্য সরকার থেকে বিভিন্ন এনজিও, শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছে। আর এমনি এক অনুষ্ঠানে মৃত্যু হল তিন জনের। ঘটনাটি আসানসোলের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে শুভেন্দু মঞ্চ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেই কম্বল নিতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাতেই অন্তত ৫ জন আহত হন।
আসানসোলের পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে কম্বল বিতরণ ঘিরে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।পদপিষ্ট হয়ে এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। পায়ের চাপে পড়ে এক শিশু ও দু’জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গিয়েছে এদিন শিব চর্চা ও কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, আসানসোল পৌরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী চৈতালী তিওয়ারি। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। তাতেই প্রধান অতিথি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রথমে কিছু কম্বল বিতরণ করেন শুভেন্দু অধিকারী।এরপর শুভেন্দু অধিকারী বেরিয়ে যাওয়ার পর কম্বল বিতরণ করার সময় হুড়োহুড়ি শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, শুভেন্দু থাকাকালীন বিশৃঙ্খলা হয়নি। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। পদপিষ্ট হয়ে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষনা করেন। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরও একজনের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় আহত ৪ জন আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
অনুমতি ছাড়াই বিজেপির সমাবেশ
এই ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেছে টিএমসি। এই দুর্ঘটনার জন্য বিরোধী দল নেতাকে দায়ী করেছেন কুণাল ঘোষ। টিএমসির মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি পুলিশের অনুমতি ছাড়াই এই বেআইনি সমাবেশের আয়োজন করেছে। গরীবের জীবন নিয়ে খেলা হয়েছে। আসানসোল পুলিশ সূত্রেও জানা যাচ্ছে যে বিজেপি এই কর্মসূচির জন্য কোনও অনুমতি নেয়নি।
শুভেন্দুর ক্ষমা চাওয়া উচিত
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, আমি বিজেপি নেতাদের বলতে চাই, তাদের দলের লাগাম একজন পাগলের হাতে তুলে দিয়ে তারা কী করছে? এই দুর্ঘটনার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। কেন তাকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হবে না?
শুভেন্দুর বিবৃতি
বিজেপি এই কর্মসূচির জন্য কোনও অনুমতি নেয়নি, কুণাল ঘোষ এমন দাবি করলেও শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইট করে জানান , সভার বিষয় পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তিনি চলে যাওয়ার পর পুলিশের তরফে নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়।
গোটা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি দ্রুত মৃত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানান বিরোধী দলনেতা।