
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। কমিশন বিজেপির 'বি' টিম হয়ে কাজ করছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শনিবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাতে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। CEO দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করেন অরূপ। তৃণমূলের দাবি, "২ কোটি নাম বাদের ষড়ষন্ত্র করা হচ্ছে।"
সাংসদ পার্থ ভৌমিকের দাবি, 'কমিশন রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে ২ বছরের কাজ ২ মাসে করছে। একটি রাজনৈতিক দলের নির্দেশে কমিশন কাজ করছে।'
মন্ত্রী অরূপের দাবি, "রাজ্যজুড়ে BLO অ্যাপে সমস্যা। একটি রাজনৈতিক দলের নির্দেশে কমিশন কাজ করছে। কমিশন নিরপেক্ষ নয়। তার জন্য ৩৫ জনের প্রাণ গেছে। ৩ জন BLO আত্মহত্যা করেছে। আজও চাপড়ায় ১ জন BLO আত্মঘাতী।"
তাঁর আরও দাবি, "ইচ্ছাকৃতভাবে কমিশ ছবি ভুল দিচ্ছে। কমিশনের ওয়েবসাইট ভুলে ভরা। প্রত্যেক বুথে ১৫০-২০০ করে নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কমিশনের গাফিলতিতে অনেক মানুষের মৃত্যু। এর জন্য দায়ী কমিশন। তাদের কথা হয়েছে ২ কোটি মানুষের নাম বাদ দিতে বলেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর ভুল দেওয়া হয়েছে।"
এদিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই কাজ করছে BLO-রা। কমিশনের তথ্যে কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।" আসন্ন বিধানসভায় তৃণমূল ২৫০টি আসনে জয়ী হয়ে ফিরবে দাবি করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
প্রসঙ্গত, এর আগে পশ্চিমবঙ্গে SIR চলার মাঝেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব, নথি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ ও বিএলও-দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এমনকী এই প্রক্রিয়ার জন্য মানুষের জীবন বিপন্ন বলেও মনে করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অবাস্তব কাজের চাপ, অসম্ভব টাইমলাইন এবং অনলাইন ডেটা এন্ট্রির মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় পুরো প্রক্রিয়াটির বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত করে বলে মনে করেন মমতা।
তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠিতে লেখেন,' স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) যে ভাবে জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমি বারবার আমার গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এখন SIR ঘিরে পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আমি আপনাকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। আধিকারিক ও নাগরিকদের উপর যেভাবে এই প্রক্রিয়া জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল অপরিকল্পিত ও বিশৃঙ্খলই নয়, বিপজ্জনকও বটে। এমনকী প্রাথমিক প্রস্তুতি, পর্যাপ্ত পরিকল্পনা বা যোগাযোগের অনুপস্থিতি প্রথম দিন থেকেই প্রক্রিয়াটিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, বিএলও-দের প্রশিক্ষণে গুরুতর ফাঁক রয়েছে। তাঁরা কাজের মাঝখানে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। এই কারণেই প্রক্রিয়াটি বেজায় জটিল হয়ে উঠেছে।