বাঁকুড়ার বিজেপি নেতার মৃত্যু খুন নাকি আত্মহত্যা? যাবতীয় রহস্যের মাঝে তৃণমূলের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দুটো হাত বেঁধে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেন। বুধবার ছবি-ভিডিও সহ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন শুভেন্দু।
তিনি দাবি করে বলেন, "তৃণমূলের গুন্ডারা বিজেপি নেতা শুভদীপ মিশ্রকে খুন করে হাত বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে। বাঁকুড়া জেলার নিধিরামপুর ২৫৭ নম্বর বুথ থেকে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী ছিলেন শুভদীপ মিশ্র। সালতোরা বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের লোটিয়াবনি অঞ্চলে অবস্থিত এই এলাকা। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে কারণ তৃণমূলের চোর ও গুন্ডারা বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান হজম করতে পারেনি।"
বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপারকে এই ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে হবে বলে তিনি দাবি করেন। গত মাসে এসপি দ্বারা জারি করা একটি আদেশ এখানে সংযুক্ত করা হয়েছে। মনে হচ্ছে তিনি তার পদের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে চেয়েছিলেন। এই আদেশটি রাজনৈতিক প্রকৃতির বলে মনে হচ্ছে এবং প্রশাসনিক নয়।
এদিন বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, "অস্বাভাবিক কোনও বিষয় নয়, মার্ডার করা হয়েছে। দুটো হাত বেঁধে রেখে কারও ঝোলা সম্ভব না। তাঁকে গাছে বেঁধে ঝুলিয়ে দিয়েছে। শুভদীপকে খুন একটি পলিটিক্যাল মার্ডার। এর পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে সহমত হয়ে আমরা সিবিআইয়ের দাবি করছি। সব থানাতে বিক্ষোভ চলছে। স্থানীয়া বিধায়িকার নেতৃত্বে চন্দনা বাউরি কেন্দ্রীয় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত ও সিবিআই তদন্তের দাবি করা হচ্ছে। সিবিআই তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে।"
এক্স হ্যান্ডেলেও তিনি লেখেন, "আমি সিবিআই তদন্তের দাবি করছি কারণ পুলিশ তাদের রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করার জন্য ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের প্রমাণ ছত্রভঙ্গ করতে এবং তাদের রক্ষা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।"
জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, পুলিশের উর্দিতে তাঁরা তৃণমূল ক্যাডার ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের একমাত্র কাজ হল যতদিন সম্ভব তৃণমূল দলের অস্তিত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা।
বুধবার সকালে বাড়ির অদূরে একটি গাছ থেকে নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। মৃত বিজেপি নেতার নাম শুভদীপ মিশ্র। তাঁকে দীপু নামেই চিনতেন এলাকার বাসিন্দারা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ক্রমশ দানা বাঁধছে রহস্য। গ্রামবাসীদের দাবি, এটা আত্মহত্যা নয়, খুন। ঘটনার পেছনে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে এদিন সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।