তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের একটি নতুন বাবরি মসজিদ তৈরির প্রস্তাব ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সোমবার, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় নতুন বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বক্তব্য রেখে তিনি বলেন, "৬ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের আগেই বেলডাঙায় ২ একর জমিতে বাবরি মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।"
হুমায়ুন কবির জানান, পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ শতাংশ মুসলমান জনগোষ্ঠীর অধিকার ও অনুভূতির কথা মাথায় রেখে এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, "এই মসজিদ গঠনের জন্য কোনও আর্থিক সংকট হবে না। বেলডাঙা ও বহরমপুর এলাকার সমস্ত মাদ্রাসার সভাপতি ও সচিবদের নিয়ে একটি বাবরি মসজিদ ট্রাস্ট গঠন করা হবে।"
তিনি আরও জানান, "বাংলার মুসলমানরা মাথা উঁচু করে দেখিয়ে দেবে যে বাবরি মসজিদ বেলডাঙায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি নিজেই এর জন্য এক কোটি টাকা দান করব।"
এসপি সাংসদের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল বিধায়কের এই প্রস্তাব প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়াউর রহমান বার্ক বলেন, "নতুন মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন মসজিদ তৈরি করা যায়।"
তিনি আরও বলেন, "মসজিদ নির্মাণ একটি সাংবিধানিক অধিকার। যেখানে প্রয়োজন, সেখানে নতুন মসজিদ গড়ে উঠতেই পারে। তবে এটি অন্য ধর্মের মানুষকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয়।"
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
হুমায়ুন কবিরের এই মন্তব্য নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল বেশ সরগরম। একদিকে মুসলিম সমাজের একাংশ তাঁর প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও, অন্যদিকে বিরোধী শিবির এই বক্তব্যকে নতুন করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির প্রচেষ্টা বলে দাবি করেছে।
ইতিহাসের প্রেক্ষাপট
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে ঘিরে ভারতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবঙ্গে নতুন বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব সেই পুরনো বিতর্ককেই উসকে দিচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
মসজিদ নির্মাণ ও প্রয়োজন
জিয়াউর রহমান বার্ক আরও বলেন, "যদি কোনো এলাকায় মসজিদ না থেকে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ে, তবে সেই এলাকায় মসজিদ তৈরি হওয়া উচিত।" তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, "এটি অবশ্যই শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত।"