মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা ধর্মেন্দ্র সিং দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় হাওড়ার শালিমার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। পরিস্থিতি সামলাতে নামাতে হয়েছিল ব়্যাফ। এই ঘটনায় অবশেষে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মূল অভিযুক্ত ভিকি সিং-সহ তিনজনকে চিহ্নিত করা হয়। ধৃতদের বুধবার হাওড়া জেলা আদালতে পেশ করা হয়।
রাজনৈতিক কারণে নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে খুন হয়েছেন তৃণমূল নেতা? সে সম্পর্কে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নিশ্চিত ছিল না পুলিশ। তবে ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণেই ধর্মেন্দ্র সিং খুন হয়েছেন বলে বুধবার মনে করছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের ছবি বার করে ময়দানে নামে হাওড়া পুলিশ। ফল স্বরূপ গভীর রাতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে তিন অভিযুক্ত। এদের মধ্যে চন্দন চৌধুরী ও ভিকি সিং ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। রাত এগারোটা নাগাদ র্ধমানের মেমারি থেকে এদের গ্রেফতার করা হয়। অপর অভিযুক্ত দেবেন্দ্র মিশ্রকে হাওড়ার বি গার্ডেন এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের ডি সি সেন্ট্রাল মহসানা আখতার জানান,গতকাল বিকেল চারটা নাগাদ শালিমার থেকে বাইকে চেপে ফিরছিলেন ধর্মেন্দ্র সিং।সঙ্গে ছিল তার পরিচিত সমর মাঝি।বাইক চালাচ্ছিল সমর।শালিমার তিন নম্বর গেটের কাছে তিনজন দুস্কৃতি বাইকে চেপে এসে ছয় রাউন্ড গুলি চালায় ধর্মেন্দ্র ও সমরকে লক্ষ্য করে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ধর্মেন্দ্র সিং-এর। হাতে গুলি লাগে সমরের। আহত সমর পুলিশকে জানায় চন্দন চৌধুরী গুলি চালিয়েছে। এরপরই পুলিশ অভিযুক্তদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে জানতে পারে বর্ধমানের দিকে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।সেইমত তাদের ছবি বর্ধমান পুলিশকে পাঠানো হয়।শুরু হয় নাকা চেকিং। ফলস্বরূপ দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ে পুলিশের জালে।
স্থানীয় প্রমোটার সঞ্জয় পালংদার জানিয়েছেন ,এলাকায় বড় বড় হাউজিং প্রজেক্টে অন্যদের সঙ্গে মিলে ইমারতি দ্রব্য সাপ্লাই করত ধর্মেন্দ্র সি । প্রথমে একসাথে কাজ শুরু করলেও পরে ধর্মেন্দ্র একাই কাজ করছিল নিজের দলবল নিয়ে। সেখান থেকেই বিবাদ শুরু ।ধর্মেন্দ্র সিং তৃণমূলের যুব নেতা ছিলেন। ঘটনার সঙ্গে বিরোধীদের যোগ থাকলেও থাকতে পারে গতকাল এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন তৃণমূলের হাওড়া(সদর)-র সভাপতি ও মন্ত্রী অরূপ রায়। যদিও পুলিশ এখনও এই ঘটনায় এখনো কোনোও রাজনৈতিক শত্রুতা খুঁজে পায়নি। প্রাথমিক ভাবে ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণেই খুন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে গতকাল তৃণমূল নেতা খনের পর এখনও থমথমে গোটা এলাকা। বুধবার বন্ধ ছিল দোকানপাট। কয়েকটি রুটের বাস পরিষেবাও অমিল ছিল। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিসবাহিনী।