সন্দেশখালিকাণ্ডের মূলচক্রী শেখ শাহজাহানকে অবশেষে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশ। গতরাতে মিনাখাঁর বামনপুর এলাকা থেকে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তবে শাহজাহানকে কীভাবে গ্রেফতার করা হল, কার বাড়িতে ছিলেন, এই ব্যাপারে মুখ খুলল না পুলিশ। এই প্রশ্নের জবাবে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ বললেন, 'কার বাড়িতে ছিলেন, কীভাবে গ্রেফতার, এখনই প্রকাশ করব না। এটা তদন্তের বিচার্য বিষয়।' বৃহস্পতিবার শাহজাহানকে বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হবে। ইডির আধিকারিকদের উপর হামলার ৫৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হল শাহজাহানকে। বসিরহাট আদালতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।
শাহজাহানের গ্রেফতারে আইনি বাধা ছিল বলে এদিন জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ। তিনি বলেছেন, 'পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ করা হচ্ছিল। এটা ঠিক নয়। শাহজাহানকে গ্রেফতারে আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর গত রাতে মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।' পুলিশের শীর্ষকর্তার কথায়, 'আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। বাধ্যবাধকতা উঠে যেতেই গ্রেফতার।' ইডির বাধ্যবাধকতা ছিল না। তা হলে তারা কেন গ্রেফতার করল না, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ।
১৪৭, ১৪৮-সহ একাধিক ধারায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ। সুপ্রতিম আরও বলেছেন, 'এমন কিছু করবেন না, যাতে এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি হয়। তাঁর সংযোজন, 'জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক, প্ররোচনামূলক মন্তব্য করছেন। এটা ঠিক নয়।'
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। বুধবার জামিন পান বিকাশ। গ্রেফতার করা হয়েছে শিবপ্রসাদকেও। গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকেও। তবে শাহজাহান এতদিন অধরা ছিলেন। তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। অবশেষে পুলিশি জালে তৃণমূলের দাপুটে নেতা।