পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলের প্রেস্টিজ ফাইট ছিল ঝালদা পুরসভার আস্থাভোট। আর তাতেই বিরাট ধাক্কা তৃণমূলের। আস্থা ভোটে তৃণমূলকে টেক্কা দিল কংগ্রেস। যার পরিণতিতে ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হল শাসক শিবিরের। দুই নির্দলের সমর্থন নিয়ে আস্থা ভোটে জয়ী হল কংগ্রেস। উল্লেখযোগ্য বিষয়, ৫ তৃণমূল কাউন্সিলরই আস্থাভোটে এদিন হাজির ছিলেন না।
আস্থাভোটে কংগ্রেসের জয়
নির্দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কাউন্সিলররা শাসক দলের হাত ছাড়ার পরেই বোর্ডে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই নিয়ে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছিল। ১৩ অক্টোবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন বিরোধীরা। অনাস্থার বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন ঝালদা পৌরসভার ভাইসচেয়ারম্যান সুদীপ কর্মকার। শেষে আজ আস্থাভোট অনুষ্ঠিত হয় ঝালদা পুরসভায়। তবে ভোটের আগেই আশঙ্কা ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে ঝালদা পুরসভা।
আস্থা ভোটের ফলাফল
পুরভোটের পর থেকেই ঝালদা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল শাসকদলের কাছে। পুরবোর্ড গঠনের সাত মাসের মধ্যে সংকট দেখা দেয়। ঝালদার মোট আসন ১২টি। পুরবোর্ড দখলে রাখতে ম্যাজিক ফিরাগ ছিল ৭। কংগ্রেসের ছিল পাঁচটি আসন, দুই নির্দলের সমর্থন পেয়ে কংগ্রেস ঝালদায় ৭টি আসনে ক্ষমতা দখল করে। তৃণমূলের হাতে রয়েছে ৫টি আসন। তবে এদিন আস্থা ভোটে শাসকদলের কোনও কাউন্সিলরই অংশ নেননি।
পুরবোর্ড গঠনের সাত মাসের মধ্যে সংকট
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঝালদা পুরসভার এই আস্থাভোট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পুরুলিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক অনেকটাই নির্ভর করছে এই আস্থাভোটের উপরে। সেকারণেই এদিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। আর আশঙ্কা সত্যি করে ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হল তৃণমূলের। নদিয়ার তাহেরপুরের পর ফের বিরোধীদের দখলে গেল আরও একটি পুরসভা।
কেন আস্থাভোটের পরিস্থিতি
মেরেকেটে ৭ মাস। এরমধ্যেই দখলে থাকা ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হল তৃণমূলের। পুরভোটের পর থেকেই ঝালদা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল শাসকদলের কাছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর হত্যাকাণ্ড আরও সংকট বাড়িয়েছিল। শেষে উপনির্বাচনের পর নির্দল কাউন্সিলরদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করিয়ে বোর্ড গঠন করে শাসক দল। কিন্তু সেই বোর্ড বেশিদিন স্থায়ী হতে পারল না। ৭ মাস কাটতে না কাটতেই নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করে। নির্দন কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায় ফের তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসায় নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। যার ফলে সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাতে হয় তৃণমূলকে ।