বাংলার মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, কেবলমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নির্যাতন চলছে। একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় গীত বাংলা থেকে উদ্ভূত, বাঙালিদের অবদান অনস্বীকার্য। অথচ আজ বাঙালি হওয়া যেন অপরাধ!'
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, 'মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, দিল্লি সহ একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষীদের উপর দমন-পীড়ন চলছে। তিনি আরও দাবি করেন, এসব ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার পরোক্ষভাবে সাহায্য করছে।'
তিনি উদাহরণ দেন ৫২ বছর বয়সী আরতি গুহর, যিনি কোচবিহারের বাসিন্দা ছিলেন এবং আসামে বিবাহিত ছিলেন। বাংলা ভাষী হওয়ায় তাঁকেও এনআরসি-র আওতায় এনে সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। চন্দ্রিমা বলেন, 'এই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে কি বাংলা ভাষাভাষী কেউ অন্য রাজ্যে বিয়ে করলে তাকে সন্দেহের চোখে দেখা হবে?'
তিনি বলেন, 'ব্রিটিশ আমলেও বাঙালিরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছিল, আজও বাঙালিরা লড়ছে। ওড়িশায় বহু বাঙালিকে আটক করা হয়েছে। আমাদের দল দিল্লির জামনগরে গিয়েছিল, যেখানে বাঙালিদের জোর করে বিতাড়ন করা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।'
তিনি অভিযোগ করেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন বাংলা ভাষায় কথা বললেই তিনি বুঝবেন সেটা ‘বিদেশি’। এ প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা কটাক্ষ করে বলেন, 'তোমাদের কে এই অধিকার দিয়েছে? গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরও অধিকার দিচ্ছ না!'
এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে ১৬ জুলাই রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। কলকাতায় এই সমাবেশে নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। প্রতিটি জেলাতেও এই ইস্যুতে পথে নামবেন তৃণমূল কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৮ জুলাই বাংলা সফরে আসছেন। তার ঠিক দু’দিন আগে তৃণমূলের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।