কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে গ্রীষ্মের মাঝেই ঝড়বৃষ্টির দাপট চলবে আরও কয়েকদিন। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ— উভয় অঞ্চলে একাধিক ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাবে শুক্রবার, ২৪ মে পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টি চলবে। পাশাপাশি মৌসুমি বায়ুও নির্ধারিত সময়ের আগেই এগিয়ে আসছে, ফলে আগামী দিনে বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে।
দক্ষিণবঙ্গে কী পরিস্থিতি?
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় আজ সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা, আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের কারণে অস্বস্তি বজায় থাকবে। আজ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৯ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের নিচে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা রয়েছে ৬৪ থেকে ৯২ শতাংশ।
উত্তরের জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে মঙ্গলবার আবহাওয়া আরও খারাপ হতে পারে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও উত্তর দিনাজপুরে ঘণ্টায় ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। আগামী তিন দিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে বলে পূর্বাভাস।
বঙ্গোপসাগরের দিকে নজর
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত বর্তমানে সক্রিয়। এটি এখন দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে, তবে এখনই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মৌসম ভবনের মতে, আগামী তিন–চার দিনের মধ্যেই মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ আরব সাগর, মলদ্বীপ, কোমোরিন অঞ্চল এবং মধ্য বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত অংশে প্রবেশ করবে।
অন্যত্র আবহাওয়ার কী অবস্থা?
দেশের অন্যান্য অংশেও আবহাওয়া অস্বাভাবিক। অসম, মেঘালয়, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও সিকিমে প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, রাজস্থান, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশে তাপপ্রবাহ এবং ধুলিঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। শ্রীলঙ্কা উপকূল ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সমুদ্র উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।