
মন্দারমণি সমুদ্রসৈকতে অবৈধভাবে তৈরি রিসর্ট ভাঙতে রাজ্য সরকার ইচ্ছুক নয়, এমনই অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি ও রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের এক রিপোর্ট দেখিয়ে দাবি করেন, ২০২২ সালের মে মাসে জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে জাতীয় ও পশ্চিমবঙ্গ কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, জাতীয় ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ ছিল, মন্দারমণির No Development Zone (NDZ)-এ যেসব হোটেল, রিসর্ট বা রেস্তোরাঁ প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া চলছে, তা অবিলম্বে ভেঙে ফেলা এবং জরিমানা আদায় করতে হবে। সেই জরিমানার অর্থ দিয়ে সৈকতের পরিবেশগত ক্ষতি পূরণ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনারও নির্দেশ ছিল। কিন্তু দু' বছর কেটে গেলেও, আইনি জটিলতার আড়ালে এখনও পর্যন্ত কোনও অবৈধ রিসর্ট ভাঙা হয়নি, অভিযোগ বিজেপির।
গত বছর ১১ নভেম্বর মন্দারমণির ‘অবৈধ’ হোটেল-লজ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তবে হোটেল মালিকদের সংগঠন সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে গেলে বিচারপতি অমৃতা সিং ২২ নভেম্বর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন, যা প্রথমে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকে।
এর মাঝেই আদালত ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে পুরো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি, সিআরজেড জেলা কমিটি মন্দারমণি ও সংলগ্ন চারটি মৌজায় মোট ১৪৪টি হোটেল, লজ, রিসর্ট ও হোম স্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু স্থগিতাদেশ ও আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মন্দারমণিতে ২০০২ সালের দিকে প্রথম কয়েকটি হোটেল তৈরি হয়। এরপর সমুদ্রের ধার বরাবর দ্রুতগতিতে একের পর এক রিসর্ট ও হোটেল গড়ে ওঠে। অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর জন্য সরকারি অনুমতি নেওয়া হয়নি। এর ফলে পরিবেশদূষণ বৃদ্ধির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কোস্টাল রেগুলেশন জোন (CRZ) আইন না মানারও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া অধিকাংশ হোটেলেই দমকলের ছাড়পত্র নেই, অভিযোগ সূত্রের।