পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনায় পাসপোর্ট জালিয়াতির একটি বড় চক্র ফাঁস হয়েছে। শুক্রবার এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ গ্রেফতার করেছে দুই অভিযুক্তকে। ধৃতদের মধ্যে একজন হলেন পবিত্র মণ্ডল, যিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন, এবং অপরজন হলেন জাল নথি প্রস্তুতকারক মোহাম্মদ আজারুল ইসলাম।
জালিয়াতির পরিকল্পনা ও কৌশল
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র মণ্ডল কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। দালালদের মাধ্যমে তিনি জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, এবং জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন। এগুলির ভিত্তিতে তিনি ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন।
তবে ভেরিফিকেশনের সময় জমা দেওয়া জন্ম সার্টিফিকেট জাল প্রমাণিত হওয়ায় কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পবিত্র মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাকে জাল নথি তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন কালনার গোয়ারা এলাকার সাইবার ক্যাফে মালিক মোহাম্মদ আজারুল ইসলাম। আজারুল তার ক্যাফে থেকে পবিত্রর জন্য জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরি করেছিল।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধ প্রবেশ এবং পাসপোর্ট আবেদনের পরিকল্পনা
ধৃত পবিত্র জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশে থাকা তার বাবা-মাকে ভারতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য ভারতীয় পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু নথি যাচাইয়ের সময় এই জালিয়াতি ধরা পড়ে।
আদালতের নির্দেশ ও তদন্তের অগ্রগতি
ধৃতদের শনিবার কালনা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই চক্রে আরও কেউ জড়িত কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পৌরসভার সফটওয়্যার হ্যাকের অভিযোগ
কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ জানান, ধৃতের জন্ম শংসাপত্রে তাঁর স্বাক্ষর ছিল। তবে এটি আসল নয়, বরং ফটোকপি করে পেস্ট করা হয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে কালনা পৌরসভার সফটওয়্যার হ্যাক করা হতে পারে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও অভিযোগ
পবিত্র যে বাড়িতে ভাগ্নের পরিচয়ে থাকছিল, সেই বাড়ির মালিক বিনয় সাধু জানান, তিনি এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।