
শনিবার রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক নজর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়। তৃণমূল থেকে সদ্য সাসপেন্ড হওয়া ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির দাবি করেছেন, বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবেন। সেই দাবির প্রতিফলন মিলল সকাল থেকেই। রাত থেকেই প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে, ভোর হতেই শুরু হল মানুষের মিছিল।
বিজেপির তরফে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, শয়ে শয়ে মানুষ ইট, সিমেন্ট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসছেন শিলান্যাস অনুষ্ঠানের জন্য। ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা ডট আজতক ডট ইন।
সূত্রের খবর, শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে হুমায়ুনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে তৈরি হয়েছে দুটি ক্ষেত্র, একদিকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জায়গা, অন্যদিকে মঞ্চ, যেখানে উপস্থিত থাকবেন মওলানারা।
সকাল থেকেই দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। কোনও দলের পতাকা নেই, নেই স্লোগানের ঝড়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা নিজেদের মতো করেই পৌঁছে যাচ্ছেন বেলডাঙায়। কেউ সন্দেশখালি, কেউ ক্যানিং, কেউ ভাঙড় বা দেগঙ্গা, তো কেউ সুন্দরবন ও ইটাহার থেকে এসেছেন। সকলের উত্তর একই, 'রাজনীতি নয়, মসজিদের জন্যই এসেছি।'
অনেকে জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। আবার কেউ কেউ স্বীকার করেছেন তাঁরা রাজনৈতিক কর্মী, তবে এদিন এসেছেন 'শুধু মুসলিম পরিচয়ে, আবেগের টানে।'
সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো বিষয়, হাতভর্তি বা মাথাভর্তি ইট বহন করে আসছেন অনেকেই। যার সামর্থ্য আছে, সে পুরো গাড়ি ভর্তি ইট নিয়ে এসেছে। আর যাদের আর্থিক সামর্থ্য কম, তাঁরাও ২-৩টি ইট নিয়ে হাজির, অভিলাষ, তাঁদের দেওয়া ইটেই গাঁথা হোক বেলডাঙার বাবরি মসজিদ।
বারো নম্বর জাতীয় সড়কের একেবারে ধারে তৈরি হচ্ছে নির্মাণস্থান। সকাল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে মানুষের ভিড়ও দ্রুত বাড়তে থাকে। আবেগ, ধর্মীয় অনুভূতি, রাজনীতি এবং জনমানস, সবকিছুর মিশেলে বেলডাঙা আজ রাজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। আগামী ঘণ্টাগুলিতে আরও ভিড় বাড়বে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা ও প্রশাসন।