পশ্চিমবঙ্গের চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল বুধবার (১০ জুলাই)। ফলাফল আজ, শনিবার। এই চার কেন্দ্রের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সবমহলই। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফলাফলে এরমধ্যে তিনটি দখলে রেখেছিল বিজেপি, একটিতে তৃণমূল।
মানিকতলায় উপনির্বাচনে ৬২,৩১২ ভোটে জিতলেন সুপ্তি পাণ্ডে। এবার ওই কেন্দ্রে প্রয়াত সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তিকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল।
'বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি মা-মাটি-মানুষকে। এই উপনির্বাচনের একটা রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। মানিকতলা খালি আমাদের হাতে ছিল। অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। এক দিকে এজেন্সি, এক দিকে বিজেপি। রুখে দিয়েছেন মানুষ'। ৪-০ করে প্রতিক্রিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
রানাঘাট দক্ষিণে জয়লাভ করলেন মুকুটমণি অধিকারী। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২১ সালে ওই আসনে তিনি বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন। তবে লোকসভায় রানাঘট কেন্দ্রে হারেন। উপনির্বাচনে তাঁকেই প্রার্থী করে ঘাসফুল শিবির। ৩৯,০৪৮ ভোটে জিতলেন মুকুটমণি।
বাগদায় তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা জিতলেন ৩৩ হাজার ৪৫৫ ভোটে।
৫০,০৭৭ ভোটে রায়গঞ্জে জিতলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। লোকসভা ভোটে হেরেছিলেন তিনি। সেই ক্ষতে লাগল মলম।
'মানিকতলা বিধানসভার কোথাও ভোট হয়নি। ৮৯ টি বুথে ছাপা হয়েছে। পিস্তল দেখিয়ে, সন্ত্রাস করে ভোট করা হয়েছে। ২৭৭ এর মধ্যে কেবলমাত্র ৭১টি বুথে আমাদের লোক বসতে পেরেছিল। সুপরিকল্পিতভাবে এখানে ৫১ থেকে ৫২ শতাংশ ভোট ছাপ্পা মারা হয়েছে'। নির্বাচনী ফলে পরাজয়ের আভাস স্পষ্ট হতেই এই অভিযোগ করলেন মানিকতলার বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। তাঁর মন্তব্য,'এটা আমি ভোটের ফল বলে মনে করছি না। আমি এর কঠোরভাবে নিন্দা করছি। আমি আশা করি আগামী দিনে পশ্চিমবাংলার মানুষ আরও সচেতন হবে'।
রায়গঞ্জে বিরাট ব্যবধানে জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস।
বাগদায় দশম রাউন্ডের শেষে ২৬,৯৬৭ ভোটে এগিয়ে মধুপর্ণা ঠাকুর
মানিকতলায় তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে এগিয়ে ২০,৮২০ ভোটে।
বাগদায় ১৮,৩৩৭ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর।
রানাঘাট দক্ষিণে ১৩,৪২৮ ভোটে এগিয়ে মুকুটমণি অধিকারী।
রায়গঞ্জে তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী এগিয়ে ৪১,৫৫২ ভোটে।
সপ্তম রাউন্ডের গণনা শেষে তৃণমূলের মধুপর্ণা ঠাকুর ১৪ হাজার ৫৫৩ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
বাগদায় তৃণমূলের ব্যবধান ছাড়িয়ে গেল ৩৩ হাজারের গণ্ডি। মধুপর্ণা ঠাকুর বিজেপি প্রার্থীর চেয়ে ৩৩,৫৩৭ ভোটে এগিয়ে।
মানিকতলায় ১১,৬৬৮ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল, জানাল নির্বাচন কমিশন।
রায়গঞ্জে ২১ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী। এর পরেই গণনাকেন্দ্রের বাইরে থেকে বিজয় উল্লাস শুরু।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ১৮ হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন।
রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রথম রাউন্ড গণনার শেষে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারী এগিয়ে রয়েছেন। পিছিয়ে বিজেপি প্রার্থী মনোজ কুমার বিশ্বাস।
গণনার প্রাথমিক পর্যায়ে বাগদায় এগিয়ে তৃণমূলের মধুপর্ণা ঠাকুর। পিছিয়ে বিজেপি। তবে ব্যবধান এখনও স্পষ্ট নয়। গণনা হচ্ছে হেলেঞ্চা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
মানিকতলায় ২০টি রাউন্ড গণনা হবে। মোট ১৪ টি টেবিল রয়েছে। ২৭৭ পোলিং বুথ ছিল। মোট ৪ টি হলে গণনা চলছে। প্রথম তিনটি হলে হবে ইভিএম গণনা। চার নম্বর হলে হবে পোস্টাল ব্যালট গণনা। প্রথম রাউন্ডে ৩১৮০ ভোট পেয়েছেন সুপ্তি পাণ্ডে, ৯২৯ ভোট পেয়েছেন কল্যাণ চৌবে। ২২৫১ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী।
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রথম রাউন্ড শেষের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছে ৮৬৫৫টি ভোট, বিজেপি প্রার্থী পেয়েছে ৫১৭১টি ভোট, ৩৪৮৪ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস।
সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে বিধানসভা উপ নির্বাচনের ভোট গণনা। গণনাকেন্দ্রগুলিতে থাকছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা। রায়গঞ্জে ২ টি কাউন্টিং হলে হবে ১০ রাউন্ড গণনা, বাগদায় ২ টি কাউন্টিং হলে হবে ১৩ রাউন্ড গণনা, রাণাঘাট দক্ষিণে ২ টি কাউন্টিং হলে হবে ১০ রাউন্ড গণনা, মানিকতলায় ৩ টি কাউন্টিং হলে হবে ১৩ রাউন্ড গণনা।
কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে প্রতিটি বুথ। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দিয়ে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে গণনা।
সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনার কাজ শুরু হবে। প্রথমে পোষ্টাল ব্যালট এবং ইভিএমের ভোট গণনা হবে। পোষ্টাল ব্যালটের জন্য ১ রাউন্ড এবং ইভিএমের জন্য ১৩ রাউন্ড ভোট গণনা হবে।
হিমাচল প্রদেশের দেহরা, হামিরপুর এবং নালাগড়, বিহারের রুপৌলী, মধ্যপ্রদেশের অমরওয়াড়া, উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ এবং মঙ্গলৌর, তামিলনাড়ুর বিক্রবন্দী এবং পঞ্জাবের জালন্ধর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রেও উপনির্বাচনের ফল আজ জানা যাবে।
সারা দেশে ৭টি রাজ্যের ১৩টি শূন্য বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ প্রতিটি আসনের ফল জানা যাবে।
কলকাতার মানিকতলায় তৃণমূল বিধায়ক সাধন পান্ডের মৃত্যু হওয়ার কারণে নির্বাচন হয়েছে। ২০২১ সালে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল জিতেছিল। বিধায়ক হয়েছিলেন সাধন পাণ্ডে। ২০২২ সালে তাঁর মৃত্যুর পর আসনটি ফাঁকা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন আইনি জটিলতায় মানিকতলায় উপনির্বাচন হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এবার উপনির্বাচন হল।
মানিকতলা, রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা এবং রায়গঞ্জে উপনির্বাচন হয়েছিল বুধবার। এই চার কেন্দ্রের মধ্যে তিনটিতেই উপনির্বাচন হয়েছে বিধায়কেরা দলবদল করায়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা, রায়গঞ্জ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বাগদা কেন্দ্রে জয়ী বিশ্বজিৎ দাস এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রে জয়ী কৃষ্ণ কল্যাণী পরে তৃণমূলে যোগ দেন। পদ্মপ্রার্থী হিসাবে রানাঘাটে জয়ী হওয়া মুকুটমণি অধিকারী লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। এই তিন জনকেই লোকসভায় প্রার্থী করে তৃণমূল। বিশ্বজিৎ বনগাঁ, কৃষ্ণ কল্যাণী রায়গঞ্জ এবং মুকুটমণি রানাঘাট কেন্দ্রে জোড়াফুলের প্রার্থী হন। বিধায়ক পদ থেকেও তাঁরা ইস্তফা দেন। তিন জনেই সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছেন।