টাকা না দিলে গদি ছাড়ুন! বকেয়া ইস্যুতে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই সুরেই হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আলিপুরদুয়ারে সভায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'আপনাকে টাকা দিতে হবেই। আমাদের টাকা দিন, নইলে সরকার বদলে ফেলুন। হয় টাকা দিন, না হলে গদি ছাড়ুন।'
বকেয়ার দাবিতে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। আগামী ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানী পাড়ি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ কথা শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে জানিয়েছিলেন তিনি। দিল্লি সফরে বকেয়ার দাবি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চান মমতা। এ জন্য ১৮, ১৯ এবং ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোনও এক দিন সাক্ষাতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছেন মমতা। শনিবার মমতা বলেছিলেন, 'সময় দিলে ভাল, না হলে যা করার করব।' রবিবার এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'আশা করব, প্রধানমন্ত্রী সময় দেবেন।'
এদিন মমতা আরও বলেছেন, '১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছি না। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বাংলার বাড়ি প্রকল্পেও টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের শেয়ার দিচ্ছে না। ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ভাবতে পারছেন!'
বকেয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরব তৃণমূল। সম্প্রতি লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনে বকেয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছিল। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের পরামর্শ ছিল, বকেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুন মুখ্যমন্ত্রী। শেষমেশ, এ বার বকেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মমতা।
গত অক্টোবরের শুরুতে বকেয়ার দাবিতে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে অভিষেক-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাক্ষাৎ না করেই বাড়ি চলে যান বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। যা ঘিরে দিল্লিতে কৃষি ভবনে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। অবস্থানে বসে পড়েছিলেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের সাংসদ, মন্ত্রীরা। শেষে তাঁদের টেনেহিঁচড়ে বার করে দিল্লি পুলিশ। আটকও করা হয় অভিষেকদের। যা ঘিরে সরগরম হয় রাজনীতির ময়দান।