
সরকারি হাসপাতাল থেকে মৃতের চোখ চুরির অভিযোগের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি আটকে চলে বিক্ষোভ। যশোর রোডে কনভয় আটকে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়িয়েছিল কনভয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামতে হয় পুলিশকেও। মুখ্যমন্ত্রী এরপর মৃত যুবকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে বুধবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি তো কালকে রাস্তায় আসছিলাম। আমার গাড়ি দাঁড় করিয়ে কিছু লোক কিছু কথা বলতে চাইছিল। আমি তো দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনলাম। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের যা যা প্রয়োজন, সবটাই করে দিলাম।'
সোমবার সকালে বারাসতের কাছে বামনগাছি এলাকায় রাস্তা পার করার সময়ে একটি ম্যাটাডোরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে স্থানীয় যুবক প্রীতম ঘোষের। বছর ৩২-এর ওই আহত যুবককে তড়িঘড়ি স্থানীয়রা বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তারপর প্রোটোকল মেনে ময়নাতদন্তের পর মৃত যুবকের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, যুবকের এখটি চোখ খুবলে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে প্রথমে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় পরিবার। হাসপাতালের গেটের সামনে শুয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে রোগীর আত্মীয়রা। উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। ঘটনাচক্রে সেই সময়েই ঠাকুরনগর থেকে গাড়ি করে কলকাতায় ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কনভয় দেখেই আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁর গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পরিজনেরা। গাড়ি থামিয়ে দিতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রীও।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাড়ির লোক যখন বলছেন, তখন নিশ্চয়ই সত্যতা রয়েছে। নিশ্চয়ই ঘটেছে। ঘটনা যদি ঘটে, তা হলে তদন্ত হবে। দোষীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দেহের ভিডিয়ো তুলে রাখবে, যাতে কেসের তদন্তের সুবিধা হয়। সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হবে। অপরাধ যাঁরা করেছে, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনা মর্মান্তিক। চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, যাতে মৃতের পরিবারের চলে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় চাকরি দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।'
এদিকে, এই ঘটনায় এবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজকেই তদন্ত করতে বলা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। দোষীদের কাউকেউ রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।