মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা ১৯ বছরের আমির শেখকে অবশেষে দেশে ফেরানো হল। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাঁকে বসিরহাট পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রায় দেড় মাস আগে রাজস্থান পুলিশ ও বিএসএফের অভিযানে আটক হওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল।
এপ্রিল মাসে কাজের জন্য ওড়িশার পারাদীপে যান আমির। পরে রাজস্থানের সিকার জেলায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরিবারের দাবি, ২৫ জুন রাজস্থান পুলিশ ও সশস্ত্র বিএসএফ সদস্যরা কর্মস্থলে পরিচয়পত্র যাচাইয়ের নামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করে। তিন দিন পর, ২৮ জুন তাঁকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়।
ফোন কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ
আমিরের কাকা মহম্মদ আজমাউল শেখ বলেন, 'পুলিশের চাহিদা মতো আমরা রেশন কার্ড, আধার কার্ড, জন্ম সনদ, এমনকি স্কুলের ভিডিওও পাঠিয়েছিলাম। ফোন কেড়ে নেওয়ার পর ওর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও দেখে বুঝতে পারি, আমির বাংলাদেশে বসে সাহায্যের আবেদন করছে।'
বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে বিএসএফ দাবি করেছে, আমির নাকি ভুলবশত বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ফেরার চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েন। পরে তাঁকে বসিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারলে আমিরকে বাবার জিম্মায় দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে তাঁকে পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে।
বঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল সাংসদ সমীরুল ইসলাম বলেন, 'গরিব মানুষকে নির্যাতনের পর এখন মিথ্যা বলা হচ্ছে। প্রমাণ আছে, আমিরকে বিএসএফ জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।'
মালদা দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী জানান, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ও বিএসএফ প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন আমিরের ফেরার জন্য।
এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। বীরভূম ও মুম্বইয়ের একাধিক অভিবাসী শ্রমিককে বিএসএফ বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছিল বলে অভিযোগ, পরে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়।