কানওয়ার যাত্রার পথে যত খাবারের দোকান রয়েছে, তাতে নেমপ্লেট রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, দোকানদারের নাম-পরিচয় লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই নিয়ে এবার মুখ খুললেন কলকাতার মেয়র তথা বাংলার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'এটা ঠিক নয়। উত্তরপ্রদেশে অবিচার চলছে।' ফিরহাদের কথায়, 'কে হিন্দু, কে মুসিলম, এর থেকেও মনুষ্যত্ব আগে। যিনি বিক্রি করছেন, তিনি এক জন মানুষ।'
ঠিক কী নিয়ে বিতর্ক?
কানওয়ার যাত্রার পথে যে সমস্ত খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের নাম বোর্ডে লিখে রাখার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে মুজফফরনগর জেলা পুলিশ। সংশ্লিষ্ট হোটেল বা ধাবা বা দোকান নিয়ে যাতে পুণ্যার্থীদের মনে কোনও সংশয় না থাকে, সে কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। এমনকি, রাস্তায় খাবারের অস্থায়ী দোকানগুলিতেও এই নির্দেশ মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। অতীতে কানওয়ার যাত্রা পথে আমিষ খাবার বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই নির্দেশ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, 'কানওয়ার তীর্থযাত্রীদের পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।' তিনি বলেছেন, 'কানওয়ার যাত্রীদের যাত্রাপথের দু'পাশে যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের নাম বূাধ্যতামূলক ভাবে লিখে রাখতে হবে।' বিরোধীদের অভিযোগ, নেমপ্লেটে নাম লেখার মাধ্যমে দোকানের মালিক এবং কর্মীদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসার কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী কপিলদেব আগরওয়াল ব্যাখ্যা দিয়েছেন,'সারা দেশের শিবভক্তরা হরিদ্বার গোমুখ থেকে জল নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁরা আসেন মুজাফফরনগরে। ওই পথে অনেকে নিজেদের দোকান,ধাবা, রেস্তরাঁর নামকরণ করেছেন হিন্দু নামে। অথচ মালিক মুসলিম। কারওর মুসলিম হওয়া নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। সমস্যা হল, যখন কেউ আমিষ খাবার বিক্রি করে। বৈষ্ণো ধাবা ভাণ্ডার,শকুম্ভরী দেবী ভোজনালয়, শুদ্ধ ভোজনালয় ইত্যাদি লিখে আমিষ বিক্রি করছেন শিবভক্তরা। জেলা প্রশাসনের কাছে আমার দাবি ছিল,এই ধরনের ধাবার মালিকদের নাম উল্লেখ করা হোক। এতে আপত্তির কী আছে? এমন অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, থুথু দিয়ে রেস্তরাঁয় রুটি বানানো হচ্ছে'।