ওয়াকফ বোর্ড সংক্রান্ত হিংসা ছড়ানো ঘটনায় অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ জেলায় এবার দৃশ্যত সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় প্রশাসন ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পরই দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফ আইজি কর্ণি সিং শেখাওয়াত পৌঁছান জেলা পরিদর্শনে। সেই সঙ্গেই গভীর রাতে রাজ্যের ডিজি মনোজ মালব্যর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
বৈঠক শেষে বিএসএফ কর্তা স্পষ্টভাবে জানান, “আমরা স্বাধীনভাবে কিছু করতে আসিনি। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতায় কাজ করতেই আমরা এসেছি। রাজ্যের অনুরোধে পাঁচটি কোম্পানি পাঠানো হয়েছে। যদি আরও প্রয়োজন হয়, আমরা প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, “শান্তি ফেরানোই একমাত্র লক্ষ্য। পুলিশ চাইলে আমরা আরও বাহিনী পাঠাতে পারি।”
এই অশান্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবও তৎপর হয়েছেন। তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করে জানতে চান, হিংসা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যকে সর্বতোভাবে সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলায় অন্তত ৩০০ বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের অনুরোধে আরও ৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই বিএসএফের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর।
তবে স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, অশান্তি শুরু হওয়ার সময় বহু এলাকায় পুলিশের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোথাও আবার উপস্থিত পুলিশকর্মীরা নিজেরাই আতঙ্কিত হয়ে দোকান কিংবা মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন। সেই তুলনায় বিএসএফের আগমনের পর থেকেই পরিস্থিতি কিছুটা স্থিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
ওয়াকফ আন্দোলনের জেরে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি থামেনি। তবে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, কড়া নজর রাখা হচ্ছে এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।