মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের জাফরাবাদে হিংসায় পিতা ও পুত্রকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ২। তাদের বাড়ি জাফরাবাদে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের নাম কালু ও দিলদার। হরগোবিন্দ দাস(৭৪) ও চন্দন দাসের(৪০) মৃত্যুর পর থেকে তারা ফেরার ছিল। একজনকে বীরভূম ও অপরজনকে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এই গ্রেফতারি নিয়ে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। এরা দুজন খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। আরও অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ওয়াকফ বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে শুক্রবার থেকে তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ, সুতি ও ধুলিয়ানের একাধিক এলাকা। সামসেরগঞ্জের জাফরাবাদেও হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার হরগোবিন্দ ও তাঁর ছেলে চন্দনকে খুন করা হয়। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাড়িতে লুটপাটের চেষ্টা করে। তাতে বাধা দিতে গেলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে এই খবর সামনে আসার পর থেকে হিংসা আরও বাড়তে শুরু করে। সেখানে মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। তদন্ত শুরু করে পুলিশও। নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মৃতদেহ পরিবারের সদস্যরা ঝাড়খণ্ডে চলে যান। সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন এখন তাঁরা।
সেদিনের ঘটনা নিয়ে মৃতদের পরিবারের সদস্য হৃদয় দাস জানান, ১২ শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ প্রায় ৫০০ জন দুষ্কৃতী তাঁর মামা ও ভাইকে দোকান থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে গিয়ে খুন করে। এরপর বাজারের সব দোকানপাট ও আশপাশের ৭০ থেকে ৮০টি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। মহিলাদের সঙ্গেও অশালীন ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে প্রথম হিংস শুরু হয়। সামসেরগঞ্জ থেকেও হিংসার খবর আসতে শুরু করে। তবে রাস্তা অবরুদ্ধ থাকায় পুলিশ কর্মীরা সামশেরগঞ্জে তৎক্ষণাৎ পৌঁছতে পারেনি। সেই সুযোগে ওই এলাকায় তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। বিকেলে শুরু হওয়া হিংসা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
মালদা ও বহরমপুর থেকে আধা সামরিক বাহিনী এসে পৌঁছতে পারলে হিংসা থামানো যেত। তবে বিক্ষুব্ধ জনতা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তাদের সরাতে গেলে পাথর ছোড়া শুরু হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছাড়ে। লাঠিচার্জও করা হয়।