Advertisement

তৃণমূলের কাছে নিষিদ্ধ শিলিগুড়ির দরজা কী এবার খুলবে! প্রশ্ন

বহু চেষ্টা করেও দলের অনুকূলে ভোট আসেনি। দীর্ঘ বছর বামেদের আনুগত্যে থাকা শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকা বামফ্রন্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবু শিকে ছেঁড়েনি তৃণমূলের কপালে। ভোট গিয়েছে পদ্মে। এবার শিলিগুড়ি পুরনিগম দখলে মরিয়া ঘাসফুলবাহিনী। কপাল কি ফিরবে!

বাম থেকে ডানে প্রীতিকণা বিশ্বাস
সংগ্রাম সিংহরায়
  • শিলিগুড়ি,
  • 17 Jun 2021,
  • अपडेटेड 8:27 PM IST
  • এক মাসে তিন বাম কাউন্সিলর তৃণমূলে
  • বামেদের ভোট রামে, তৃণমূল দেখছে
  • শিলিগুড়ি পুরনিগম দখলে মরিয়া ঘাসফুলবাহিনী

শুধুই নিস্ফলের, হতাশের দলে

বহু চেষ্টা করেও দলের অনুকূলে ভোট আসেনি। দীর্ঘ বছর বামেদের আনুগত্যে থাকা শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকা বামফ্রন্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবু শিকে ছেঁড়েনি তৃণমূলের কপালে। ২০১১ তে প্রবল বামবিরোধী হাওয়ায় গোটা রাজ্যে যেখানে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে তৃণমূলের বিরোধীরা, সেখানে আশ্চর্যজনক ভাবে শিলিগুড়িতে দাঁড়াতে পারেনি ঘাসফুল বাহিনী। ২০১১ বিধানসভায় একমাত্র শিলিগুড়ি বিধানসভা আসনটি দখল করেছিল অরাজনৈতিক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, তৃণমূলের টিকিটেই।

শিকে ছেঁড়েনি ঘাসফুল বাহিনীর

তবে তাঁর জয়কে তৃণমূলের জয় বলতে নারাজ ছিলেন অনেক বড় বড় তৃণমূল বিরোধী বোদ্ধাই। তাঁদের সমালোচনা সে সময় পাত্তা না দিলেও ক্রমশ তাদের অভিযোগ সত্য হয়ে গেঁড়ে বসেছে শিলিগুড়ির বাতাসে। কারণ রুদ্র ভট্টাচার্যকে সরিয়ে ২০১৬তে প্রার্থী করা হয়েছিল জাতীয় ফুটবলার, প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়াকে। তা সত্ত্বেও জয় আসেনি। বরং প্রবল ভাবে ফিরে এসেছেন বহু যুদ্ধের যোদ্ধা অশোক ভট্টাচার্য। শুধু বিধানসভা, তাই বা কেন? তারপর শিলিগুড়ি পুরনিগমের জিতে ক্ষমতা দখল করেছে বামেরা। মেয়র হয়েছেন অশোকবাবু। লড়াই ফিরিয়ে দিলেও শিকে ছেঁড়েনি তাদের ভাগ্যে।

ওমপ্রকাশেও ভাগ্য ফেরেনি

বিধানসভা নির্বাচনে ২০২১ এ প্রবলভাবে আশা করেছিলেন, শিক্ষাবিদ ওমপ্রকাশ মিশ্রকে কলকাতা থেকে উড়িয়ে এনে শিলিগুড়িতে জয়কেতন ওড়াবেন। কিন্তু সে আশা বৃথা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। লড়াই করলেও হারের ব্যবধান ছিল অনেকটাই।

রাজু বিস্তার কাছেও হার

শুধু বিধানসভা হলে তাও হতো, লোকসভা নির্বাচনে গত ১৫ বছর ধরে একচ্ছত্র রাজত্ব করছে বিজেপি। প্রথমে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিং, তারপর সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এবং বর্তমানে বিজেপির জাতীয় মুখ্য প্রবক্তা রাজু বিস্তা ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন। বাকিরা তেমন সক্রিয়তা না দেখালেও রাজুবাবু কিন্তু প্রবল সক্রিয়।এমনকী এখানকার ভূমিপুত্র গৌতম দেব কিংবা তার বাহিনী যা করতে পারেননি তিনি দু'বছর সাংসদ থেকেই সেই কাজ সেরে ফেলেছেন সুচারুভাবে। দার্জিলিং জেলায় বিধানসভায় ৫ এ ৫ আসন ছিনিয়ে নিয়ে নিজের লোকসভা আসনে সাফল্য ধরে রেখেছেন। যার ফলে দলে তাঁর প্রতিপত্তি বেড়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।

Advertisement

পুরনিগম দখল এখন পাখির চোখ

শুধুমাত্র বিধানসভায় কিংবা লোকসভা হাতছাড়া হয়েছে তা তো নয়, শিলিগুড়ি মহকুমায় আজ পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটি বারের জন্যও জয়ী হতে পারেনি রাজ্যের তৃতীয়বারের ক্ষমতায় আসা শাসক দল। এবার শিলিগুড়ি পুরনিগম ধরে রাখতে মরিয়া। তারা তাই ভোটের পর জিততে পারবেন কি না সে সন্দেহ আছে ঢের। তাই আগেভাগে কৌশলে সিপিএম নেতা-নেত্রীদের বিশেষ করে কাউন্সিলরদের দলে টানার দিকে মনোযোগ দিয়েছে তারা।

বাম কাউন্সিলরদের দিকে লোলুপ নজর

এর আগে মাসখানেকও হয়নি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন গোড়া থেকেই বামপন্থী কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ কমল আগরওয়াল, প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র আরএসপির রামভজন মাহাতো। এবার দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন গোঁড়া বামপন্থী নেত্রী প্রীতিকণা বিশ্বাস। বছর পাঁচেক আগেই ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে জিতে কাউন্সিলর হওয়া দুর্গা সিংকে দলে টেনে নিয়েছেলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ফলে ধীরে ধীরে শক্তি ক্ষয় হচ্ছে বামেদের। তবে দল ছাড়া কিংবা দলে যোগ দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের সব নেতাই সতর্কভাবে পা ফেলছেন। প্রীতিকণাদেবী যেমন নতুন দলে যোগ দিয়ে পুরনো দলের বিরুদ্ধে কোনও রকম বিষোদগার করেননি, শুধুমাত্র জানিয়েছেন উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন। সেই সঙ্গে গৌতম দেব তাঁকে দলের পতাকা ধরিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তার বস্তি এলাকায় অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে দল। অন্যদিকে সিপিএম এর তরফে এ নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করা হয়নি।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement