স্কুটি চড়ে 'বন্ধু'র সঙ্গে রাসের মেলায় গিয়েছিলেন যুবক। তারপর থেকেই নিখোঁজ। সকালে এসে তাঁর স্কুটারের চাবি দিয়ে গেলেন 'বন্ধু'র মা। একটু পরেই আমবাগান থেকে উদ্ধার হল যুবকের নিথর দেহ। নদিয়ার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার দুর্গাপুর এলাকার ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে খুন করেছে বন্ধুই।
মৃতের নাম ঋত্বিক মুন্সি(২৩)। নদীয়ার শান্তিপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কলকাতায় একটি হোটেলে কাজ করতেন। সম্প্রতি রাসের মেলা দেখার জন্য বাড়ি ফেরেন। এদিকে তাঁর বন্ধু শান্তিপুর থানার রামনগর পাড়ার সৌরভ তাঁকে একসঙ্গে রাসের মেলা দেখতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
'রাসের মেলায় যাচ্ছি', জানিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় নিজের স্কুটার নিয়ে বের হন ঋত্বিক। পরিবারের দাবি, সৌরভের সঙ্গেই তিনি মেলায় যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। রাতেই ঋত্বিকের বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু মধ্য রাত পেরিয়ে গেলেও তার কোনও খোঁজ মেলেনি। ছেলে কোথায় গেল? চিন্তায় বারবার ফোন করতে থাকেন বাড়ির লোকেরা। কিন্তু ফোন রিং-ই হয়ে যায়। পরিবারের দাবি, অনেকবার ফোন রিং হওয়ার পর সৌরভ রিসিভ করে। দাবি, সৌরভ জানান যে, ঋত্বিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে চিন্তার কিছু নেই, তিনি ঋত্বিকের সঙ্গেই আছেন।
এদিকে রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যায়। পরিবারের সকলে ঋত্বিকের চিন্তায় উদ্বিগ্ন। হঠাৎ বাড়িতে চলে আসেন সৌরভের মা। দাবি করা হচ্ছে, এসেই ঋত্বিকের স্কুটির চাবি পরিবারের হাতে তুলে দেন। বলেন স্কুটি তাঁর বাড়িতে আছে। এসে যেন নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো বিষয়টাতেই খটকা লাগে পরিবারের লোকজনের।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি ফোন আসে। কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানায়, একটি আমবাগান থেকে ঋত্বিকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এরপরেই সৌরভের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে ঋত্বিকের পরিবার।
তাঁদের দাবি, সৌরভই রাসের মেলা দেখতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে চক্রান্ত করে এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, বারবার জোর করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হত ঋত্বিককে। এদিনও ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
এদিকে অভিযুক্ত সৌরভ এখন পলাতক। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলে তদন্তে বড় যোগসূত্রও মিলতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
সংবাদদাতা: বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি