কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁ-র এনকাউন্টার ঘটনার বিষয়ে এখন সন্ধিহান সকলেই। কি কারণে হত্যা করা হল রাজু ঝাঁকে তা নিয়ে চলছে জোর পুলিশি তদন্ত। সিসিটিভি খতিয়ে দেখে তদন্তের সব তথ্য তল্লাশিতে ব্যস্ত পুলিশ। কিন্তু জানেন এই কয়লা মাফিয়া রাজুর পরিচয় ও তার জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠার গল্প? খনি অঞ্চলের বস্তির বাসিন্দা, ছোট্ট ঘরে বড় হয়ে ওঠা রাজু ঝাঁর জিরো থেকে হিরো হওয়ার বিষয় নিয়ে অনেক গল্প আছে, স্থানীয় সূত্রের খবর, রানিগঞ্জে খনি অঞ্চলে এক সময় ঘুরে বেরাতো রাজু। হঠাৎ করেই কয়লা পাচার-সহ বিভিন্ন বেআইনি কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে সে। এরপরেই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিল মাফিয়া জগতের কিং পিন। অথচ একসময় রানীগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড়ের ছয় সাত নম্বর কলোনির বাসিন্দা, রাজু ঝাঁ-র বাবা ছোটখাটো ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। কোনভাবে দিন গুজরান করতেন। রানীগঞ্জের মারোয়ারী সনাতন বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেই পড়াশুনোর পাঠ চুকিয়ে দেয় রাজু। স্কুল লাগোয়া এলাকার দুষ্কৃতীদের দেখে প্রভাবিত হয়ে প্রথমে এক প্রভাবশালী দুষ্কৃতীর হয়ে কাজ করতে শুরু করে সে। পরে ধীরে ধীরে কয়লা কারবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে রাজু। 1990 সালের আগে ভাগে সে এই কাজে যুক্ত হয়। সে সময় বেশ কয়েক দফায় তার বিরুদ্ধে কয়লা পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করায় তাকে জেল খাটতেও হয়েছে। তবে সেসবকে পরোয়া না করে, গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা রাজু ঝাঁ পরবর্তীতে কয়লার প্যাড চালু করে, চলে সিন্ডিকেট রাজও। আর এ সবের মাঝেই পালা পরিবর্তনের পর ব্যাপক প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করে রাজু। পরে ঠিক 2021 বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজু বিজেপিতে যোগ দেয়। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক হইচই হয়েছিল। সেই রাজু ঝাঁয়ের, এবার বর্ধমানের শক্তিগড়ে সুট আউট এ মৃত্যু হয়, সেই মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে, ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, সম্ভবত প্রমাণ লোপাটের কারণে রাজু ঝাঁকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। অনেকেই আবার দাবি করেছেন, যে গাড়িতে করে সে গিয়েছিল, তা গরু পাচারকারীর গাড়ি। আর তার সঙ্গে সর্বদাই একদল যুবক থাকতো কিন্তু এদিনের খুনের সময় তারা ঘটনাস্থলে ছিল না বলেই দাবি। যা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দল সিপিএম। সিপিএমের দাবি শুধুমাত্র প্রমাণ লোপাটের জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যা নিয়ে পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের রানীগঞ্জ জোনাল সম্পাদক তথা রানীগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক রুনু দত্ত।