শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পৃথিবীতে বসবাস করছে মানুষ। মহাকাশ সম্পর্কে জানার কৌতুহল মানুষকে চাঁদে নিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বিজ্ঞানীরাও মঙ্গল গ্রহে পা রাখতে চলেছেন। এছাড়াও মানুষের মনে প্রশ্ন অন্য গ্রহেও কি পৃথিবীর মতোই বসবাস করা যায়? ভিনগ্রহে কতদিন বাঁচতে পারবে মানুষ?
এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে পৃথিবীর মতো আর কোনও গ্রহ নেই। পৃথিবী একটি সুন্দর গ্রহ। এই পৃথিবীর বুকেই বছরের পর বছর জীবনযাপন করছে মানুষ।
আমেরিকান অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট নিল ডিগ্র্যাস টাইসনের মতে, সৌরজগতের যে কোনও জায়গায় যাওয়ার জন্য একটি জিনিস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল একটি স্পেসস্যুট। স্পেসস্যুট ছাড়া মহাকাশে কোথাও যাওয়া কার্যত অসম্ভব। তাই স্পেস স্যুট পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে এটা জানলে অবাক হবেন যে পৃথিবী ছাড়া এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মানুষ ২-৩ মিনিটের বেশি বেঁচে থাকতে পারে।
সূর্য
প্রথমেই শুরু করা যাক সূর্য দিয়ে। নাসার মতে, সূর্যের তাপমাত্রা প্রায় ২৭ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট (১৫ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং পৃষ্ঠে প্রায় ১০,০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তাই কেউ সূর্যের কাছে যেতে পারবেন, তা কল্পনা করাই অর্থহীন। তাই বসবাসের জন্য সূর্য কোনওভাবেই ভাল জায়গা নয়।
বুধ
বুধের যে দিকটি সূর্যের মুখোমুখি হয় তা অত্যন্ত গরম (৮০০ F / ৪২৭ºC)। আর বুধের পিছনের দিকটি বরফের মতো জমাট, তাপমাত্রা থাকে মাইনাস -১৭৯ºC। সেক্ষেত্রে মানুষ যদি দুটি তাপমাত্রার মধ্যে রেখা অতিক্রম করে, তাহলে যতক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারবে ততক্ষণই বেঁচে থাকবে। অর্থাৎ খুব বেশি হলে মিনিট দুয়েক বেঁচে থাকা যাবে সেখানে।
আরও পড়ুন - রবীন্দ্র-নজরুলের তুলনায় পিছিয়ে পঞ্চকবির বাকিরা? শিল্পীরা যা বললেন...
শুক্র
শুক্র গ্রহের তাপমাত্রাও ৯০০ F (৪৮২ºC)। তাই সেখানেও মানুষের অবস্থা সূর্যে যাওয়ার মতোই হবে। তবে শুক্রের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর সমান, তাই সেখানে পুড়ে ছাই হয়ে যায়ার আগে পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানো যাবে।
মঙ্গল
টাইসন বলেন, মঙ্গল গ্রহ খুবই ঠাণ্ডা। কিন্তু সেখানকার বাতাস খুবই পাতলা। তাই সেই তাপমাত্রায় পৃথিবীতে যতটা শীতের তীব্রতা অনুভূত হয়, ততটা হবে না। মঙ্গল গ্রহে থাকতে বসবাসের জন্য প্রচুর গরম পোশাক দরকার। এখানেও কোনও একজন যতক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারবেন ততক্ষণই বেঁচে থাকতে পারবেন। এখানেও মানুষ খুব বেশি হলে ২ মিনিটই বেঁচে থাকতে পারবে।
বৃহস্পতি
বৃহস্পতিতে অনেক ধরনের গ্যাস রয়েছে। একে 'গ্যাস জায়ান্ট'ও বলা হয়। এখানে বায়ুমণ্ডল শুষ্ক, যা হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, মিথেন এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের মিশ্রণে গঠিত। এখানে অক্সিজেন নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই গ্রহে এমন কোন শক্ত পৃষ্ঠ নেই, যেখানে কিছু থাকতে পারে। এটি গ্যাসীয় মেঘের মতো। তাই বৃহস্পতিতে জীবনধারণ সহজ না। সেখানে মানুষ শুধু গ্যাসের চাপেই মারা যাবে। সেখানেও এক সেকেন্ডের বেশি বেঁচে থাকা সম্ভব না।
শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন
বৃহস্পতির মতো শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুনও গ্যাসীয় গোলা। সেগুলিতেও গ্যাসের চাপে টিকে থাকা অসম্ভব। তাই সেখানেও কেউ বেঁচে থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুন - 'গান গুলো রেখো ভাল', এবার নচিকেতার গলায় বাংলা গজল
পৃথিবী
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আশ্চর্যজনক অক্সিজেন, জল, খাদ্য এবং আরও অনেক কিছু রয়েছে যা এই গ্রহকে বাসযোগ্য করে তুলেছে। এখানে বসবাসকারীরা ভাগ্যবান। কারণ মানুষ এখানে নিশ্চিন্তে বেঁচে থাকতে পারে।