ভারতে দ্বিতীয় ওয়েভের তীব্রতা ক্রমে কমছে। দৈনিক সংক্রমণও ৪০ হাজারের নীচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮,৭৯২ জন। মারা গিয়েছেন ৬২৪ জন। তবে দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ন্ত্রণে এলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার তৃতীয় ওয়েভের হাতছানি। দেশে থার্ড ওয়েভ নিয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তবে ভারতের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থা ক্রমে মারাত্মক হয়ে উঠছে। বর্তমানে সেখানে প্রতিদিন নতুন করে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ভ্রমণ এবং ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার কারণে এই সঙ্কট আরো তীব্র হয়েছে। একে ‘যুদ্ধকালীন’ ভয়াবহতার সঙ্গে তুলনা করেছেন কেউ কেউ।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহভাবে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে ইন্দোনেশিয়াতেই। এর মধ্যে ২৬ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন কমপক্ষে ৬৮ হাজার মানুষ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী জাকার্তার বাইরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। ফলে মোট আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।
পর্যটন কেন্দ্র বালি দ্বীপ এবং প্রধান দ্বীপ জাভা’তে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বান্দুং, সুরাকার্তা এবং পামেকাসান শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ এবং আইসিইউ থেকে বলা হয়েছে, করোনা নিয়ে ভর্তি হতে মানুষের ঢল নেমেছে। কিন্তু স্থান সংকুলান না হওয়ায় তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে মেডিকেল প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে অক্সিজেন প্রস্তুতকারদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা আছে তা নিয়েই তারা কাজ চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ায় বাইরে তাঁবু টাঙিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন।
লকডাউন জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কোনোভাবেই সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ নেই। সংক্রমণ এবং মৃত্যু পাল্লা দিয়ে বাড়ছেই।
দেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ভ্যাকসিন সম্পর্কে সচেতন করতে অপ্রচলিত বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ জুড়ে লকডাউনের সময়সীমাও আরো বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
এক কথায় ভারতকে ছাপিয়ে এশিয়ার নতুন করোনা হটস্পট হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়া।