চরম অব্যবস্থা শ্রীলঙ্কায়। খাদ্যশস্যের জন্য লড়াই করছে সাধারণ মানুষ। শিশুদের জন্য নেই দুধ। রয়েছে ওষুধের ঘাটতিও। ১৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। এই অবস্থায় বিক্ষোভ বাড়ছে শ্রীলঙ্কায়। বলা ভালো, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বিপাকে শ্রীলঙ্কায় সাধারণ মানুষ।
স্বাধীনতার পর শ্রীলঙ্কায় এমন সংকট আগে দেখা যায়নি। মার্চের শেষ দিক থেকে কলম্বোতে বিক্ষোভ চলছে। বিপর্যস্ত মানুষ রাস্তায় নেমেছে। শিশু থেকে মহিলা সবাই নেমেছে রাস্তায়। দাবি খাবার, ওষুধের।
ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কায় কার্যকর করা কারফিউ ১২ মে সকাল ৭ টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখা যাবে না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশ, বিক্ষুব্ধদের দেখলেই গুলি মারা হবে।
শ্রীলঙ্কায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা ও হিংসা ছড়ানোর পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন রাজাপক্ষে। পদত্যাগের পর তাঁর সমর্থকরা হিংসা ছড়াতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি হওয়ার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। মঙ্গলবার কলম্বোতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের কাছে একদল জনতা শ্রীলঙ্কার একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর করে। গাড়িতে আগুনও দেয়।
শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার রাজাপক্ষের পদত্যাগের পরও বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ প্রশমিত করা যায়নি। তারা রাজাপক্ষের পৈতৃক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
শুধু তাই নয়, রাজাপক্ষের দলের একজন সাংসদসহ প্রবল ৮ জন মারা গেছেন। শ্রীলঙ্কার খুব খারাপ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এখন গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
সবথেকে বিপাকে সাধারণ মানুষ। তাদের কাছে না আছে খাবার না ওষুধ। ফলে রাস্তায় লম্বা লাইন দিয়েছেন তাঁরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে বাড়ছে বিক্ষোভ।
কেন শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিতি? ২১ এপ্রিল ২০১৯ সালে ইস্টার উপলক্ষ্যে শ্রীলঙ্কায় একাধিক বিস্ফোরণ হয়। এই হামলার সরাসরি প্রভাব পড়ে শ্রীলঙ্কার পর্যটনে। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে পর্যটন খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারপর থেকে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে।
অথচ দুই বছর আগে পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে দেখা হত শ্রীলঙ্কাকে। ২০১৯ সালে করোনার সময় শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি বড়সড় ধাক্কা খায়। শ্রীলঙ্কা এখনও তার বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পারেনি। ফলে তাদের অর্থনীতি তলানিতে।