শনিবার BRICS জোটের ৯ দেশের বিরুদ্ধে ১০০% শুল্ক আরোপের হুশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর কথায়, এই দেশগুলি কোনওভাবে মার্কিন ডলারকে দুর্বল করার চেষ্টা করলেই, তাদের আর আমেরিকায় ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।
BRICS জোটে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। তুরস্ক, আজারবাইজান এবং মালয়েশিয়া জোটে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। সঙ্গে আরও কয়েকটি দেশ এই জোটে আগ্রহ দেখিয়েছে। এই জোটের মূল লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক স্তরে বাণিজ্যের নীতি নিয়ে আলোচনা করা।
মার্কিন ডলার দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে লেনদেনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলি, বিশেষ করে BRICS সদস্যরা, মার্কিন ডলারের এই একচেটিয়া প্রাধান্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেছে।
সেই প্রসঙ্গেই ট্রাম্প বলেন, 'এই দেশগুলির আমাদের নিশ্চিত করুক যে তারা কোনও নতুন BRICS মুদ্রা তৈরি করবে না বা অন্য কোনও মুদ্রাকে সাপোর্ট করা শুরু করবে না, যার থেকে ডলারের বিকল্প তৈরি হতে পারে। যদি তারা এমন কিছু করে, তবে তাদের ১০০% শুল্ক দিতে হবে এবং তাদের আমেরিকার বাজারে ব্যবসা করার স্বপ্ন দেখা ভুলে যেতে হবে।'
গত অক্টোবরে BRICS শীর্ষ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন ডলারকে 'হাতিয়ার' করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, 'আমরা ডলারের ব্যবহার বন্ধ করিনি। কিন্তু ওরা যদি আমাদের কাজ করতেই না দেয়, তাহলে তো আমরা বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হব।'
রাশিয়া ইতিমধ্যেই একটি নতুন পেমেন্ট সিস্টেম তৈরির কথা বলেছে। সেটা এখনকার SWIFT-এর বিকল্প হতে পারে। রাশিয়ার সেই প্রস্তাবিত সিস্টেম যদি লাগু হয়, সেক্ষেত্রে পশ্চিমী দেশগুলির কোনও নিষেধাজ্ঞা বা জোরই আর খাটবে না। তাদের বাধা এড়িয়েই ব্রিকস দেশগুলি নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারবে।
তবে মার্কিন ডলারের ভবিষ্যত নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ট্রাম্প। তাঁর কথায়, BRICS কোনওভাবেই মার্কিন ডলারকে বিশ্ববাণিজ্যে রিপ্লেস করতে পারবে না। তিনি বলেন, 'যে দেশ এমন কিছু করার চেষ্টা করবে, তাদেরই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটবে।'
ট্রাম্পের এই হুমকির ফলে BRICS এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলিতে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই জোট যদি সত্যিই একটি নতুন বড় মুদ্রা বা পেমেন্ট সিস্টেম দাঁড় করিয়ে দেয়, তাহলে সেটা বিশ্ব অর্থনীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে।
সবশেষে এটুকুই বলা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু মার্কিন ডলারের অবস্থান রক্ষারই চেষ্টা নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতিতে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখারও চেষ্টা বলা যেতে পারে।