একদিকে অজিত ডোভাল। উল্টোদিকে ভ্লাদিমির পুতিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা সরাসরি রাশিয়ায় পৌঁছে দিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার ভারত-রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের এক বড় মাইলস্টোনের সাক্ষী থাকল বিশ্ব। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ইউক্রেন সফর নিয়ে পুতিনকে জানান ডোভাল। তারপরেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী মাসে কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তাব দেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতির সময় এই পদক্ষেপের ফলে ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে এক মধ্যস্থতাকারী হিসাবে নিজের অবস্থান তুলে ধরছে।
বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্সবার্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন এই প্রস্তাব দেন।
পুতিন-ডোভাল বৈঠকের প্রায় তিন সপ্তাহ আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ইউক্রেনের রাজধানী কিভ সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করেন। এদিকে ২২-২৪ অক্টোবর রাশিয়ার কাজান শহরে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
আমি আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা দিতে এসেছি: ডোভাল
পুতিনের সঙ্গে কথোপকথনে, ডোভাল রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিনকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদী আপনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। উনি ইউক্রেন সফর এবং রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বৈঠক সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করার জন্য মুখিয়ে ছিলেন৷ তিনি চেয়েছিলেন যাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং বিশেষভাবে আপনার সঙ্গে দেখা করতে রাশিয়ায় যাই। সেদিনের আলোচনা খুব ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যেই হয়েছিল। তাতে মাত্র দু'জন নেতা ছিলেন। তাঁদেরর সঙ্গে দু'জন লোক ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলাম। আমি এই কথোপকথনের সাক্ষী।'
পুতিন-ডোভাল বৈঠকের বিষয়ে রাশিয়ার জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে রুশ রাষ্ট্রপতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মস্কো সফরের সময় করা চুক্তির বাস্তবায়ন এবং নিকট ভবিষ্যতে 'যৌথ কাজের সারসংক্ষেপ' তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছেন। ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের পরিকল্পনা তৈরি করতে ২২ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
রুশ সংবাদমাধ্যমের বিবৃতি
'আমরা আমাদের ভালো বন্ধু মোদীর জন্য অপেক্ষা করছি এবং তাঁর জন্য শুভকামনা জানাই,' রুশ মিডিয়ায় পুতিনকে উদ্ধৃত করে এমনটাই বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলেনস্কির সঙ্গে আলাপচারিতায়, মোদী বলেছিলেন যে, ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়েরই যুদ্ধ শেষ করতে হলে আর সময় নষ্ট না করে একসঙ্গে বসতে হবে। ভারত এই অঞ্চলে শান্তি পুনরুদ্ধারে 'সক্রিয় ভূমিকা' পালন করতে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রায় নয় ঘণ্টার ইউক্রেন সফর করেছিলেন। ১৯৯১ সালে ইউক্রেনের স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সেখানে সফর যান। মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের ছয় সপ্তাহ পরেই তিনি ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন।