অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে রবিবার হাজার হাজার মানুষ অভিবাসনবিরোধী সমাবেশে অংশ নেন। 'March for Australia' নামে আয়োজিত এই বিক্ষোভে প্রচার সামগ্রীতে বিশেষভাবে ভারতীয় অভিবাসীদের উল্লেখ করা হয়, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
প্রচারপত্রে দাবি করা হয়, গত পাঁচ বছরে গ্রিক ও ইতালীয়দের তুলনায় বেশি সংখ্যক ভারতীয় অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন এবং এর ফলে সাংস্কৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। উল্লেখ্য, সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে প্রায় ৮.৪৫ লাখে পৌঁছেছে, যা এখন মোট জনসংখ্যার ৩%।
সিডনি, মেলবোর্ন, ক্যানবেরা সহ বিভিন্ন শহরে সমাবেশ হয়। সিডনিতে প্রায় ৫-৮ হাজার মানুষ জড়ো হন, অনেকেই জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ছিলেন। একইসঙ্গে Refugee Action Coalition পাল্টা সমাবেশ করে, যেখানে শতাধিক মানুষ অংশ নেন এবং অভিবাসনবিরোধী এজেন্ডার কড়া সমালোচনা করেন।
মেলবোর্নে বিক্ষোভকারীরা ফ্লিন্ডার্স স্ট্রিট স্টেশন থেকে রাজ্য সংসদ পর্যন্ত মিছিল করেন। সেখানে কুখ্যাত নব্য-নাৎসি ব্যক্তিত্ব থমাস সিওয়েল বক্তব্য রাখেন। পুলিশকে পাল্টা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং লঙ্কা স্প্রে ও লাঠিচার্জ করতে হয়। অন্তত ছজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই অফিসার আহত হয়েছেন।
সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এই সমাবেশের কড়া সমালোচনা করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক বলেন, 'আমাদের দেশে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় এমন লোকদের কোনও স্থান নেই।' বহুসংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী ড. অ্যান অ্যালি অভিবাসী সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে বলেন, 'বর্ণবাদ ও উগ্র ডানপন্থার অস্ট্রেলিয়ায় কোনও জায়গা নেই।'
অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ সোশ্যাল সার্ভিসেসও বিবৃতিতে জানায়, দেশের বৈচিত্র্য একটি শক্তি, হুমকি নয়। অন্যদিকে বিরোধী দলের ছায়া অ্যাটর্নি জেনারেল জুলিয়ান লিজার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবাদে ভারতবিরোধী মনোভাব ও ইহুদি-বিরোধী প্রবণতা দেখা গিয়েছে, যা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়ায় উগ্র ডানপন্থী কার্যকলাপ বেড়েছে। ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধের পর ইহুদি-বিরোধী হামলা বেড়ে যাওয়ায় সরকার নাৎসি স্যালুট ও উগ্র প্রতীক নিষিদ্ধ করেছে, লঙ্ঘন করলে জেল শাস্তির বিধান করা হয়েছে।