নেপালের Gen Z কাঠমাণ্ডুয় মেয়র বালেন্দ্র শাহকে দেশের অন্তর্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রীর আসনে দেখতে চায়ছিলেন। যদিও ওই জনপ্রিয় নেতা তাতে আপাতত সাড়া দেননি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সুশীলা কার্কিকে প্রধানের আসনে দেখা যাবে। নেপালের পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি চিন ঘেঁষা ছিলেন বলে দাবি করেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। ভারতের সীমানা নিয়ে একাধিকবার বিতর্কেও জড়িয়েছিলেন তিনি। বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিলেন না এই বালেন শাহও।
২০২৩ সালের জুন মাসে নিজের অফিসে নেপালের নয়া মানচিত্র সাঁটিয়েছিলেন তিনি। সেই মানচিত্র তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। সেখানে ভারতের অনেক রাজ্যকে গ্রেটার নেপালের অংশ হিসেবে দেখানো হয়। সেই সময় ভারতের নয়া সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের ছবি টাঙানো হয়েছিল। আর তারই প্রতিবাদে ভারতের একাধিক অঞ্চলকে গ্রেটার নেপালের অংশ বলে দাবি করে বসেছিলেন বালেন শাহ।
মেয়র বালেন্দ্র শাহ তাঁর অফিসে গ্রেটার নেপালের যে মানচিত্র টাঙিয়েছিলেন সেখানে হিমাচল প্রদেশের পশ্চিম কাংড়া থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব তিস্তা পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রসঙ্গত, ১৮১৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং নেপালের মধ্যে সুগৌলি চুক্তির আগে নেপালের যে মানচিত্র ছিল সেটাই তুলে ধরেছিলেন বালেন্দ্র। তবে এই চুক্তির পর নেপালকে তাদের অনেকটা অংশ ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বর্তমান নেপালের ৬০ শতাংশের মতো এলাকা ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। যদিও এই চুক্তিকে বিতর্কিত বলে মনে করা। কারণ আজও ভারত এবং নেপালের মধ্যে ৫০টিরও বেশি জায়গায় দাবি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। আর ভারতের সঙ্গে এই বিরোধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শাহ অবিভক্ত নেপালের মানচিত্র প্রকাশ করছিলেন। যদিও নেপালের তৎকালীন সরকার এই বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেননি।
এখানেই থেমে থাকেননি বালেন্দ্র শাহ। ২০২৩ সালে ফের বলিউড ছবি বয়কটেরও ডাক দিয়েছিলেন তিনি। 'আদিপুরুষ' নামে ওই সিনেমার একটা সংলাপ ছিল 'সীতা ভারতের কন্যা'। আর তাতেই আপত্তি তোলেন শাহ। অনেকে বিশ্বাস করে, সীতার জন্ম নেপালের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত জনকপুরে। আর সেই বিশ্বাসকে হাতিয়ার করে শাহ সেই সংলাপ হটানোর দাবি করেন।
সেই আন্দোলন সাড়া ফেলে দেয় নেপালে। শুরু হয়েছিল ভারত বিরোধিতা। শাহ ঘোষণা করেন, কেবল 'আদিপুরুষ' নয়, কাঠমাণ্ডুতে কোনও ভারতীয় ছবি দেখানো হবে না। পোখরাতেও হিন্দি ছবির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে সেই আন্দোলন হলেও ছবি থেকে সংলাপ সরানো হয়নি।
তবে মজার বিষয় হল এই বালেন শাহ কর্ণাটক থেকে তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। আবার গ্রেটার নেপালের মানচিত্র বিতর্কের পরই স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরুতেও এসেছিলেন।