বাড়িতে জল জমিয়ে রাখা যাবে না। তাহলেই বাসা বাঁধবে ডেঙ্গির মশা। এই প্রচার দেখে আমরা অভ্যস্ত। অথচ এ যেন উলটপুরাণ। মশা তাড়ানো তো দূর অস্ত, লক্ষ লক্ষ মশা জমানো হচ্ছে ব্রাজিলে। বলা ভালো চাষ করা হচ্ছে। খোলা হয়েছে মশা তৈরির ও তাদের সঞ্চয় করে রাখার জন্য এক আস্ত কারখানা।
মশা থেকে ডেঙ্গু হয়, কিন্তু ব্রাজিলের এই কারখানায় ডেঙ্গি প্রতিরোধ করবে এমন মশার উৎপাদন করা হচ্ছে। সেখানকার বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, এই মশাগুলো ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষকে ডেঙ্গি, জিকা, চেকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ থেকে রক্ষা করছে, সুরক্ষা দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO এর মতে, প্রতি বছর মশাবাহিত রোগে লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়। ২০২৪ সালে ব্রাজিলে ৬৫ লক্ষ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল ৬,২৯৭ জনের। প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়েছিল এডিস ইজিপ্টি মশা দ্বারা। মশা মারার ওষুধ প্রয়োগ করা হলেও তা কাজে দেয়নি।
আসলে যে মশাগুলোর উৎপাদন করা হচ্ছে সেগুলোর নাম ওলবাচিয়া। এটি আসলে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া যা ৬০% এরও বেশি পোকামাকড়ের মধ্যে পাওয়া যায়। এই ব্যাকটেরিয়া মশার ভিতরে ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি রোধ করে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ল্যাবে উৎপাদনের পর এই ওলবাচিয়াকে খোলা আকাশের নিচে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাহলে তারা বন্য বা ভাইরাস বৃদ্ধিকারী মশাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মানুষের দেহে সংক্রমণ কমাচ্ছে।
ব্রাজিল সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, এতে ভাইরাসের বিস্তার বন্ধ কমেছে। আটটি শহরের ৫০ লক্ষ মানুষকে এখন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষিত।
চলতি বছরের ১৯ জুলাই কুরিটিবাতে খোলা হয় এই কারখানা। ৩,৫০০ বর্গমিটার এলাকায় তৈরি এই জায়গায় ৭০ জন কর্মচারী কাজ করে। প্রতি সপ্তাহে ১০০ মিলিয়ন মশার ডিম উৎপাদিত হয়। প্রতি বছর প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষকে মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচানো যাবে।