ভারত ও কানাডার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) সংক্রান্ত আলোচনা আপাতত স্থগিত। কানাডার বাণিজ্যমন্ত্রী মেরি এনজি অক্টোবরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য মিশন স্থগিত করছেন। অক্টোবরে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। দিন কয়েক আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জি২০ সম্মেলনে ভারতে ঘুরে গেছেন। তারপর হঠাৎ কী হল যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করল কানাডা?
খালিস্তান ইস্যু উদ্ধৃত না করে, এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, রাজনৈতিক সমস্যাগুলির সমাধান হয়ে গেলে আলোচনা আবার শুরু করা হবে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ভারত কানাডার কিছু নির্বাচিত রাজনৈতিক উন্নয়নের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এসব আলোচনা বন্ধ রেখেছি। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হলেই আবারও আলোচনা শুরু হবে। এটা শুধু একটি বিরতি।
এর আগে শুক্রবার ভারত জানিয়েছিল, কানাডা তার মাটি থেকে ভারত বিরোধী কাজ বন্ধ না করলে তার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না। প্রায় এক দশক পর দুই দেশের মধ্যে এফটিএ নিয়ে আলোচনা শুরু হতে চলেছে। কিন্তু ভারত থেকে এই বিবৃতি আসার পর, কানাডা আগামী মাসে ভারত সফরের বাণিজ্য মিশন স্থগিত করে প্রতিক্রিয়া জানায়।
ভারতের একজন সরকারী কর্মকর্তা বলেছিলেন কানাডার রাজনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আপত্তির কারণে কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধ করা হয়েছিল। যেখানে মে মাসে, কানাডার বাণিজ্যমন্ত্রী মেরি এবং পীযূষ গোয়েল জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেছিলেন, তারা বছরের শেষ নাগাদ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে বাড়ানোরর আশা করছেন।
শিখ ফর জাস্টিস গ্রুপ ১০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি গুরুদ্বারে খালিস্তানের দাবিতে গণভোটের আয়োজন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে কানাডায় ভারতবিরোধী কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর, ট্রুডো বলেছিলেন, কানাডা সর্বদা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিবেকের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রকাশকে রক্ষা করবে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে আমরা হিংসা ও ঘৃণার অবসানও চাই। জানা যায়, এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে এফটিএ নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা শুরু হয় ২০১০ সালে।
খলিস্তানি ইস্যুতে ভারত ও কানাডার মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে
খলিস্তানি ইস্যুতে ভারত ও কানাডার মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। ট্রুডোর শাসনকালে, অনেক খলিস্তানি ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর হামলাও করেছিল, যেকারণে ভারতে ক্রমাগত সমালোচনা হয়েছিল। ধীরে ধীরে খলিস্তানিদের প্রতি ট্রুডোর ভালোবাসা বাড়ছে, যে কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দূরত্বও বাড়ছে।
গত বছর ব্যবসা এমনই ছিল
জানা যায়, ভারত ও কানাডা একে অপরের সঙ্গে বড় পরিসরে ব্যবসা করে। কানাডা ছিল ভারতের ৩৫তম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার যেখানে ২০২৩ অর্থবছরে ৮.১৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ছিল। এই সময়ের মধ্যে, ভারত কানাডায় ৪.১১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে, যা ২০২২ অর্থবছরে ৩.৭৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। কানাডা থেকে আমদানি ২৯.৩ শতাংশ বেড়ে ৪.০৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।