কর্পোরেট সংস্কৃতির বাড়তি চাপ এবং নেতিবাচক কর্মপরিবেশ কর্মীদের ওপর কীভাবে গভীর প্রভাব ফেলে, তার একটি বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছেন চিনের হেনান প্রদেশের লি নামের এক কর্মী। অফিসে কর্মরত অবস্থায় ম্যানেজারের তিরস্কারের পর তিনি এতটাই মানসিক চাপে পড়েন যে, তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ে। খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে টয়লেট ব্যবহার, এমনকি সামান্য নড়াচড়া করাও বন্ধ হয়ে যায় লি’র, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে ক্যাটাটোনিক স্টুপার নামে পরিচিত।
কীভাবে ঘটল এই অবনতি:
লি’র সহকর্মীরা জানিয়েছেন, এক মাস আগে তার ম্যানেজার তাকে কাজের কোনো কারণে তিরস্কার করেন। এরপরে ধীরে ধীরে তিনি বিষণ্নতার গুরুতর অবস্থায় পৌঁছে যান এবং নড়াচড়া করার শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। ঝেংঝু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এ ধরনের ক্যাটাটোনিক স্টুপার হতাশার চরম পর্যায়। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক অনুযায়ী, ক্যাটাটোনিয়া এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যক্তি মানসিক শকের কারণে প্রতিক্রিয়া দেখাতে অক্ষম হয়ে পড়েন। এই অবস্থা থেকে বের হওয়া অনেক সময় অত্যন্ত কঠিন এবং দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব:
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা যখন তার মাথার নীচ থেকে বালিশ সরিয়ে দেন, তার মাথা এমনভাবে ঝুলে থাকে যেন তার শরীর তার নির্দেশনা মানতে পারছে না। এমনকি টয়লেট ব্যবহারের জন্যও তার পরিবারকে সাহায্য করতে হয়। পরিবারের ভাষ্য মতে, লি সবসময়ই অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিলেন, যার কারণে তার অনুভূতি ও সমস্যাগুলি শেয়ার করা তার জন্য কঠিন ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা:
লি’র ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই চিনের কর্পোরেট পরিবেশ এবং কঠোর বসেদের ব্যবহারের সমালোচনা করেন। কেউ কেউ বলেন, কর্মীদের প্রতি অযাচিত চাপ প্রদান এবং অপ্রয়োজনীয় বকাবকি একজন ব্যক্তির কর্মস্পৃহা ধ্বংস করতে পারে। একজন মন্তব্য করেন, “কাজের চাপ মাঝে মাঝে সহ্য করতে হয়, কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে চাকরি ছাড়া সম্ভব নয়।”