চিন দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বতে ভারতীয় সীমান্তের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি বিশাল বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে। এটি সেই প্রকল্প যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদিত হয়েছিল। এখন চিনএর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে। চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এই বাঁধ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই অনুষ্ঠানটি তিব্বতের নিয়িংচি অঞ্চলে হয়েছিল, যা অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত।
অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন
অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু কয়েকদিন আগে সতর্ক করে দেন যে চিন ব্রহ্মপুত্র নদের উপর 'জল বোমা' তৈরি করছে। তিনি বলেন যে এই প্রকল্প ভারতের নিরাপত্তা এবং অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হতে পারে।
চিন ১৬৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে
এই প্রকল্পে চিন প্রায় ১৬৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে চলেছে। এর মধ্যে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত। বলা হচ্ছে যে এটি ইয়াংজি নদির উপর নির্মিত থ্রি জর্জেস বাঁধের সমান বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। চিন এই প্রকল্পটিকে তিব্বত অঞ্চলের উন্নয়ন এবং কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। সরকারি সংবাদমাধ্যমের মতে, এটি তিব্বতের স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদাও পূরণ করবে।
ভারত ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে
ভারত এই বছরের জানুয়ারিতে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। বিদেশ মন্ত্রক ব্রহ্মপুত্রের নিম্নাঞ্চলের উপর যাতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য চিনকে অনুরোধ করেছিল। জবাবে, চিন দাবি করে যে এই প্রকল্পটি নিরাপদ এবং কারও ক্ষতি হবে না।
ভারতের উপর এর প্রভাব কী হবে?
এই বাঁধ নির্মাণের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি, যেমন অরুণাচল প্রদেশ এবং অসম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চিন যদি নদের জল বন্ধ করে দেয় বা তার প্রবাহ পরিবর্তন করে, তাহলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বন্যা বা খরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশও আক্রান্ত হতে পারে
এই নদটি তিব্বত থেকে শুরু হয়ে ভারতে এবং তারপর বাংলাদেশ পর্যন্ত প্রবাহিত। এমন পরিস্থিতিতে, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী খান্ডু বলেন যে চিন এখনও কোনও আন্তর্জাতিক জল চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এমন পরিস্থিতিতে, এই প্রকল্প নিয়ে বিশ্বাস করা কঠিন। তিনি সতর্ক করে দেন যে চিন কী করতে পারে তা কেউ জানে না।