Advertisement

'ভারতের জন্য চিন সবচেয়ে বড় হুমকি, সামরিক জাল বিস্তার করছে', মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

খবরে বলা হয়েছে, মায়ানমার, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশে ভারত তার পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা বিবেচনা করছে। যদি এটি ঘটে, তাহলে এটি ভারতের জন্য একটি গুরুতর কৌশলগত হুমকি তৈরি করতে পারে।

'ভারতের জন্য চিন সবচেয়ে বড় হুমকি, সামরিক জাল বিস্তার করছে', মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট'ভারতের জন্য চিন সবচেয়ে বড় হুমকি, সামরিক জাল বিস্তার করছে', মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট
Aajtak Bangla
  • নতুন দিল্লি,
  • 25 May 2025,
  • अपडेटेड 3:25 PM IST
  • ভারত ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে
  • অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্বার্থের জন্য অপরিহার্য

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আবারও চিনের সম্প্রসারণবাদী নীতি এবং ভারতের প্রতি তার কৌশলগত চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিরক্ষা নীতি বিশ্ব নেতৃত্বকে শক্তিশালী করা, চিনকে মোকাবেলা করা এবং ভারতের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর দৃষ্টি রেখেই। চিনকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে ভারত। যদিও পাকিস্তানকে একটি সীমিত নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে দেখে ভারত, যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।

পিএলএ-র সামরিক ঘাঁটির পরিকল্পনা, ভারতের জন্য শঙ্কার ঘণ্টা

খবরে বলা হয়েছে, মায়ানমার, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশে ভারত তার পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা বিবেচনা করছে। যদি এটি ঘটে, তাহলে এটি ভারতের জন্য একটি গুরুতর কৌশলগত হুমকি তৈরি করতে পারে। কারণ এই দেশগুলি ভারতের সরাসরি সামুদ্রিক এবং স্থল সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।

আরও পড়ুন

এটিকে 'স্ট্রিং অফ পার্লস' কৌশলের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যার অধীনে ভারত মহাসাগরে তার প্রভাব বাড়াতে চায় চিন। মার্কিন প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রচেষ্টা চিনের বিশ্বব্যাপী সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে। এটি ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানি সীমান্ত সন্ত্রাস, সীমান্তে গুলিবর্ষণ সত্ত্বেও ভারতের কৌশলগত চিন্তাভাবনায় চিনকে প্রাথমিক হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চিনের প্রভাব ভারসাম্যপূর্ণ করতে এবং নিজের বৈশ্বিক নেতৃত্বের ভূমিকা জোরদার করতে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ভারত। যার মধ্যে রয়েছে সামরিক মহড়া, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র বিক্রি এবং তথ্য ভাগাভাগি। ভারত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে। কোয়াড, ব্রিকস, সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) এবং আসিয়া-র মতো বহুপাক্ষিক ফোরামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

চিনের সঙ্গে উত্তেজনা কমেছে, কিন্তু সীমান্ত বিরোধ রয়ে গেছে

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ২০২৪ সালের অক্টোবরের শেষে ভারত ও চিন পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (LAC) দুটি বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছিল। যদিও এই পদক্ষেপ সীমান্ত উত্তেজনা কিছুটা কমিয়ে আনে, তবুও সীমান্ত বিরোধ এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে একই এলাকায় উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

Advertisement

পাক জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

২০২৫ সালের এপ্রিলের শেষের দিকে জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। এরপর, ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং আত্মঘাতী ড্রোন এবং ভারী গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ১০ মে নাগাদ উভয় পক্ষ সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান দ্রুত তার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত আধুনিকীকরণ করছে এবং ভারতকে তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে। এই কৌশলটি পাকিস্তানের সামরিক চিন্তাভাবনা এবং সীমান্তে তার আগ্রাসনের প্রতিফলন ঘটায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান মূলত চিনের অর্থনৈতিক ও সামরিক উদারতার উপর নির্ভরশীল। চিন থেকে প্রাপ্ত সম্পদ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে পাকিস্তান কেবল তার সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে না বরং তার পরমাণু ক্ষমতাও প্রসারিত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন-পাকিস্তান জোট ভারতের জন্য দ্বিগুণ কৌশলগত হুমকি তৈরি করছে। একদিকে, LAC-তে চিনের চাপ এবং অন্যদিকে পাকিস্তানের পরমাণু নীতি ভারতকে গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করছে।

সীমান্ত পারস্পরিক সংঘাত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে

প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী বছরে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে থাকবে। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত কার্যকলাপ এবং কাশ্মীর সম্পর্কে আক্রমণাত্মক বক্তব্য এই নীতির অংশ। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য যে ভারত ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তান মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ এবং নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ থাকলেও নির্ভরতা কমছে

ভারত ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে। কারণ এটি অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্বার্থের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করে। প্রতিবেদন অনুসারে, যদিও মোদী সরকার রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জামের নতুন ক্রয় কমিয়ে দিয়েছে, তবুও রাশিয়ার তৈরি ট্যাঙ্ক এবং যুদ্ধবিমানের বিশাল মজুত বজায় রাখার জন্য ভারতকে এখনও রাশিয়ার খুচরো যন্ত্রাংশের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই সহযোগিতাকে চিন ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভারসাম্য হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

'মেড ইন ইন্ডিয়া'-এর উপর জোর, সামরিক আধুনিকীকরণ অব্যাহত

দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের উদ্বেগ কমাতে ভারত এই বছর 'মেড ইন ইন্ডিয়া' উদ্যোগকেও প্রচার করবে। ২০২৪ সালে ভারত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পরীক্ষা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অগ্নি-১ প্রাইম মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং অগ্নি-ভি মাল্টিপল টার্গেট ক্ষেপণাস্ত্র। এর সঙ্গে ভারত তার দ্বিতীয় পরমাণু-চালিত সাবমেরিনও নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করেছে।

Read more!
Advertisement
Advertisement