Dalai Lama Birthday: লাগাতার বৃষ্টিতেও থামল না উচ্ছ্বাস। রবিবার সকালের বৃষ্টির মধ্যেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমালেন হিমাচলের ধর্মশালার তসুগলাখাং মন্দির প্রাঙ্গণে। ১৪তম দলাই লামা তেনজিন গ্যাতসোর ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের বহু প্রতিনিধি, স্কুল পড়ুয়া, শিল্পী, রাজনৈতিক নেতা ও সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ভক্তরা।
গত কয়েক দিন ধরেই জোর জল্পনা চলছিল, হয়তো দলাই লামা 'প্রতিষ্ঠানে'র অবসান হতে চলেছে। সেই আশঙ্কা কার্যত ভেসে গেল রং, গান আর নৃত্যে ভরা এই জমকালো অনুষ্ঠানে।
সকালে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলাই লামা। বাহারি কেকের সামনে বসে তিনি বললেন, 'মানুষের ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। আমি 'বোধিসত্ত্বচর্যাবতার' অনুসরণ করি। সকল সত্ত্বার সেবাই আমার লক্ষ্য।' তাঁর কথায়, 'নিজেকে বড় করে তোলার জন্য নয়, বরং অন্যকে গুরুত্ব দেওয়াটাই আমার লক্ষ্য। সেই কারণেই মানুষ আমার চারপাশে জড়ো হন।'
ধর্মগুরু আরও বলেন, 'এই যে আপনারা আমার জন্মদিনে এসেছেন, সেটা পুরোপুরি ভালবাসা থেকে। কোনও বাধ্যবাধকতা থেকে নয়। তাই যখন নিজের জীবন নিয়ে ভাবি, তখন মনে হয়, নাহ, আমি এই জীবনটা নষ্ট করিনি। দলাই লামা হওয়ার পরেও আমার অহংকার বা গর্ব নেই। আমি একজন ভিক্ষু, বুদ্ধের শিষ্য হিসেবে জনসাধারণ ও ধর্মের সেবা করাই আমার কাজ।'
এদিন সুইজারল্যান্ডের তিব্বতি গায়িকা জাম্যান চোয়েদেনের গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেন মঙ্গোলিয়া ও আলবেনিয়ার শিল্পীরা। তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের প্রধান সিকিয়ং পেনপা ছেড়িং জানান, ২০২৫ সাল ‘Year of Compassion’ হিসেবে পালিত হবে।
এই উপলক্ষে কাশাগ বা তিব্বতি নির্বাসিত সরকারের মন্ত্রিসভা এদিন এক বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, দালাই লামার চারটি মূল জীবননীতি। বিশ্বজুড়ে মানবিক মূল্যবোধের প্রচার, ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা, তিব্বতি সংস্কৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞানের পুনরুজ্জীবন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বর্তমান পৃথিবী একাধিক সংকটে জর্জরিত। হিংসাত্মক সংঘর্ষ, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, বাণিজ্য যুদ্ধ, সামাজিক ভাঙন, নৈতিক অবক্ষয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুগুলিতে দলাই লামার বার্তা সকলকে নতুন দিশা দেখাবে।'
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ও রাজীব রঞ্জন সিংহ। উপস্থিত ছিলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, সিকিমের মন্ত্রী সোনম লামা এবং হলিউড তারকা রিচার্ড গের।
ভিডিও বার্তায় জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিন্টন এবং বারাক ওবামাও। মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিওও শুভেচ্ছা জানান।