
পাকিস্তানে উত্তেজনা। পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে সিন্ধুদেশ গড়ার দাবিতে উত্তাল বন্দর শহর করাচি। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি করে আন্দোলনকারীরা, চালানো হয় ভাঙচুরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানো নামানো হয় সেনা। রবিবার ছিল সিন্ধি সাস্কৃতিক দিবস। সেদিনই করাচির রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আন্দোলনকারীরা। তাদের দমন করতে নামে সেনা। তখনই দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়।
সিন্ধদের সংগঠন JSSM-এর ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। করাচির জনবহুল রাস্তায় পাক সরকার ও প্রশাসনের মুণ্ডুপাত করা হয়। পাকিস্তান মুর্দাবাদ শ্লোগান দেওয়া হয়। শেহবাজ শরিফের পদত্যাগের দাবিও ওঠে। তারপরই বিক্ষুব্ধদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ ও সেনা জওয়ানরা।
এদিকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে হাজার হাজার প্রতিবাদী। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আন্দোলন প্রতিরোধে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে শুরু করে পুলিশ। সাময়িকভাবে ঘটনাস্থল থেকে আন্দোলনরতরা পিছু হটলেও তারা ভাঙচুর শুরু করে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে জখম হন একাধিক জন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে কমপক্ষে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, পাঁচজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। তারপরই সরকারের তরফে পুলিশকে সম্পত্তির ক্ষতি এবং যানবাহন ভাঙচুরে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশ এমনিতেই বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে। পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে পৃথক দেশ গড়ার পক্ষে আন্দোলন করছে সেখানকার আম আদমি। তার মধ্যেই সিন্ধ নিয়েও অস্থিরতা বাড়ছে। চাপে শেহবাজ শরিফের সরকার।
যদিও সিন্ধদেশের দাবি নতুন নয়। ১৯৭২ সালে সিন্ধি নেতা জিএম সাইদ স্থানীয় কয়েকটি সিন্ধি রাজনৈতিক পার্টিকে একত্রিত করে নতুন করে সিন্ধু অঞ্চলের নাম সিন্ধুদেশ প্রস্তাব করেন। সেই দাবি সিন্ধু ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে আলোড়ন তোলে। সে সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ক্রমাগত নির্যাতন ঠেকাতে সিন্ধুদেশ লিবারেশন আর্মি গঠন করা হয়। বর্তমানে ওই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে দেশটিতে।
প্রসঙ্গত, সিন্ধু প্রদেশ নিয়ে সম্প্রতি মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি দাবি করেছিলেন, 'আজ সিন্ধু ভারতের অংশ নাও হতে পারে। কিন্তু সভ্যতার দিক থেকে, সিন্ধু সর্বদা ভারতের অংশ থাকবে। যতদূর ভূমির কথা, সীমানা পরিবর্তন হতে পারে। কে জানে, আগামিকাল সিন্ধু আবার ভারতে ফিরে আসতে পারে।'