Advertisement

Serial Killer's Head kept In Jar for 181 Years: কাচের জারে ১৮১ বছর ধরে রাখা এই সিরিয়াল কিলারের মাথা, কেন?

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আজও এক ব্যক্তির মাথা গত ১৮১ বছর থেকে বেশি সময় ধরে যারে সুরক্ষিত রাখা আছে। সে এক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। না জানি কতজন মানুষকে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করেছিল। একটা সময়ের পর সে নিজেই গুণতি ভুলে যায়। 

কাচের জারে ১৮১ বছর ধরে রাখা এই সিরিয়াল কিলারের মাথা, কেন?কাচের জারে ১৮১ বছর ধরে রাখা এই সিরিয়াল কিলারের মাথা, কেন?
Aajtak Bangla
  • নয়াদিল্লি,
  • 07 Oct 2022,
  • अपडेटेड 12:30 PM IST
  • ১৮১ বছর ধরে জারবন্দি সিরিয়াল কিলারের মাথা
  • ৭০ এর বেশি লোককে খুন করে সে
  • ঠিক কতজনকে খুন করেছে তা মনে করতে পারেনি খুনি

Serial Killer's Head kept In Jar for 181 Years: পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আজও এক ব্যক্তির মাথা গত ১৮১ বছর থেকে বেশি সময় ধরে যারে সুরক্ষিত রাখা আছে। কারণ জেনে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। এই ব্যক্তি এমন কোনও মহান কাজ করেননি। যার কারণে তার মাথা এভাবে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। বরং এই ব্যক্তি অত্যন্ত মারাত্মক এবং ভয়াবহ সিরিয়াল কিলার ছিল। যে, না জানি কতজন মানুষকে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করেছিল। একটা সময়ের পর সে নিজেই গুণতি ভুলে যায়। 

পর্তুগালের ইতিহাসের শেষ ফাঁসি

এই সিরিয়াল কিলারকে পর্তুগালের ইতিহাসে শেষবার ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছিল তার জঘন্য কাজের জন্য। যদিও এরপরে আর কোনওদিন কাউকে সে দেশে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়নি। এই সিরিয়াল কিলারের নাম দিয়েগো আলভেজ (Diogo Alves)। এর জন্ম ১৮১৯ সালে পর্তুগালের গেসিলিয়াতে। সে যখন যুবাবস্থায় পৌঁছয়, তখন কাজের সন্ধানে পর্তুগালের লিসবনে পৌঁছয়। সে চাকরির চেষ্টা করে কিন্তু চাকরি পায় না।

আরও পড়ুন

ভিড় এলাকায় শুরু করে লুঠপাট

কিছুদিন চাকরির সন্ধানে ঘুরে ব্যর্থ হওয়ার পর, কয়েকজনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় যারা কোনও চাকরি করতো না। তবুও তারা ঠাটবাটের জীবনযাপন করছিল। তার মনে প্রশ্ন ছিল ওই সমস্ত লোকেরা কি কাজ করে, যে তাদের কাছে এত টাকা রয়েছে, এরপরে সে জানতে পারে যে সে সমস্ত লোকেরা ছোটখাটো ক্রাইম করে পয়সা কামাই করে। এর পরে তার মাথায় বিষয়টি ঢুকে যায়, যে তাতে অল্প পরিশ্রমে মোটা টাকা আয় করা সম্ভব। সেও ঠিক করে যে অপরাধের রাস্তাতেই আয়ের পথ দেখবে। এরপর লুঠপাটের কাজ শুরু করে।

নতুন ছক কষে

এই কাজে যখন ভালই আয় শুরু হয়, তখন তার লোভ আরও বেড়ে যায়। এভাবে যে আরও বড় কিছু করলে ভাল হয়, দিয়েগো অনেক চিন্তাভাবনা করে এবং রিসার্চ করে। রিসার্চে দিয়েগো জানতে পারে যে লিসবনের ২১৩ ফুট উঁচু একটা পুল রয়েছে। এই সেতুর পার করে লিসবন থেকে শহরের বাইরে যাওয়া যায়। এই পুলের ব্যবহার চাষাবাদ করা কৃষকেরা বেশি করে। তারা বাইরের এলাকা থেকে শহরে আসে। সেখানে ফল সবজি বিক্রি করে। সন্ধ্যায় এই সেতু দিয়ে ফিরে যায়। এরপরে দিয়েগো সেখানে গিয়ে দেখতে পায় যে কৃষকের বেশিরভাগ দল বেধে সেখানে আসা-যাওয়া করে বা একজন-দুজন কৃষক কোনও সময় একাও আসা-যাওয়া করে। দিয়েগো প্ল্যান করে যে, যখন শেষ কৃষকটি সন্ধ্যায় সেখান দিয়ে যাবে, সে তাকেই নিজের লক্ষ্য বানাবে। যাতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এরপরে সেই কাজ শুরু করে দেয়। প্রায়ই সে একা যাতায়াতকারী কৃষকদের আচমকা হামলা করে তাদের লুটপাট করে পুল থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিত।

Advertisement

রোজ সেতুতে ঘাপটি মেরে বসে থাকতো দিয়েগো

তার বিশ্বাস ছিল যে ২১৩ ফুট উঁচু থেকে পড়ার পর কৃষকদের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। এভাবে দিয়েগো ওই পুলকে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়। সেখানে সে রোজ লুকিয়ে বসে থাকতো এবং একা যাতায়াতকারী কৃষকদের লুটপাট করে এভাবে মেরে ফেলত। সে অবশ্য যদি কোনও লুটে পয়সা বেশি পেয়ে যেত, তাহলে কিছুদিন নিজের খরচ চালাতে এবং লুটের ঘটনা কিছুদিনের জন্য বিরাম দিত। কিন্তু যদি তার পয়সা কম উঠত তাহলে সে পরদিন ফের সেখানে বসে থাকতো।

বাধা দিলেই ছুরি দিয়ে আক্রমণ করত

কেউ যদি বিরোধিতা করত তাহলে ছুরি নিয়ে হামলা করত সে। আক্রমণ করতে গিয়ে অনেক কৃষকেরা, যারা তাকে বাধা দিত, তখন দিয়েগোর কাছে থাকা চাকু নিয়ে দিয়েগো তারা ওদের উপর হামলা করত এবং তারপরে সেতু থেকে নিচে ফেলে দিত। এক মাস যাওয়ার পর এলাকায় বিষয়টির খবর ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে লিসবনে যাচ্ছে এবং গায়েব হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রথমে কৃষকরা আত্মঘাতী হচ্ছেন বলে মনে করে। যখন বিষয়টি জানা যায় যে, সেতুর  নীচে বেশ কিছু লোকের লাশ পাওয়া গিয়েছে, তখন লাশগুলি শণাক্ত করার পর জানতে পারা যায় যে নিখোঁজ লোকদের মধ্যেই এরা সকলে রয়েছে। পোস্টমর্টেমেও জানা যায় যে সকলেই, তাঁরা নিচে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে মারা গিয়েছে। তখন পুলিশ আবার আত্মহত্যার থিওরিতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এই ঘটনা চলতে থাকে এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। পুলিশ এরপর নড়েচড়ে বসে এবং তদন্ত শুরু করে। মৃতদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা শুরু করে এবং তারা জানতে পারে যে, অনেকেরই পয়সার কোনও অভাব ছিল না। পরে পুলিশের সন্দেহ অন্যদিকে মোড় নেয়।

পুলিশ সেতু বন্ধ করিয়ে দেয়

পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সবার আগে ওই সেতু পুলিশ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়। পুল বন্ধ হতেই কৃষকদের গায়েব হওয়ার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের কাছে এটি বড় অবাক হওয়ার বিষয় ছিল। এরপরে পুলিশ সেতুর নীচে তল্লাশি নেওয়া শুরু করে এবং সেখান থেকে প্রচুর লাশ পাওয়া যায়। এরপরে কিছু কিছু লাশের শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্নও ছিল। এরপরে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি আত্মহত্যা নয় খুনের মামলা।

এরপর তিন বছর দিয়েগো আর কিছু করেনি

এরপর পুলিশ যখন প্রথমবার মেনে নেয় যেটি খুনের ঘটনা, পুলিশ খুনির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। দিওগো বিষয়টি জানতে পারে এবং চিন্তাভাবনা করে কিছু সময় পর্যন্ত এ কাজ আপাতত বিরাম দিতে হবে। তিন বছর পর্যন্ত দিওগো এই ধরণের কোনও ঘটনা ঘটায়নি। এরপর সরকার ঠিক করে যে এখন পুল খুলে দেওয়া উচিত। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। চিন্তা-ভাবনা করে যে এখন ফির আবার নতুন করে নিজের কাজ শুরু করা উচিত। কিন্তু নিরাপত্তা জোরদার হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন নিজের কাজ করতে পারছিল না সে।

দিয়েগো এরপর গ্যাং তৈরি করে 

দিয়েগো চিন্তাভাবনা করে যে এখন ক্রাইম করার পদ্ধতি বদলে দিতে হবে। এরপরে দিয়েগো ছোটখাটো অপরাধ করা লোকজনকে জোগাড় করে একটা দল তৈরি করে। প্রথমে লিসবনে ছোটখাট লুটপাট করে এবং এবং সেই পয়সা দিয়ে গ্যাংয়ের জন্য হাতিয়ার কেনে। এরপরে গ্যাংয়ের সঙ্গে মিলে দিয়ে শহরে থাকা ধনী পরিবারকে নিজেদের লক্ষ্য বানানো শুরু করে। শুধু  লুঠপাট নয়, বরং খুনও করতো তারা। এবার নতুন করে খবর ছড়ায় যে ধনী লোকেদের ঘরে লুটপাটের পর তাদের খুন করে ফেলা হচ্ছে। গোটা শহর এই খবরে ভয় পেতে শুরু করে। পুলিশের টেনশন বেড়ে যায়।

Advertisement

বিখ্যাত চিকিৎসকের বাড়িতে লুটপাট করে চার জনকে মেরে ফেলা হয়

এরই মধ্যে দিয়েগো লিসবনের জনপ্রিয় চিকিৎসককে নিজেদের টার্গেট বানায় এবং প্ল্যান অনুযায়ী চিকিৎসকের ঘরে ঢুকে লুটপাট করে চিকিৎসক সময়ের পরিবারের চারজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। চিকিৎসকের খুনের ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের উপর এবার প্রেসার আসা শুরু করে। অভিযুক্তদের যে কোনওভাবে ধরতেই হবে। পুলিশ ফের তদন্ত শুরু করে।পুলিশ গোটা শহরে নাকাবন্দি করে দেয় এবং শহরের সমস্ত পুলিশকে অ্যাকটিভ করে দেওয়া হয়। যাতে অভিযুক্তরা শহর থেকে বাইরে না যেতে পারে। এরই মধ্যে পুলিশ শহরের বাইরে থেকে বাইরে বের হতে দেখে চার থেকে পাঁচজন লোককে ধরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে।

ধৃতদের মধ্যে দিয়েগোও ছিল

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে দিওগো এবং এই গ্যাংয়ের পান্ডাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় যে এরা সমস্ত ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। প্রত্যেকে এবং দিয়েগোও অভিযোগ স্বীকার করে নেয়। দিয়েগো জানায় যে ৭০ জনকে মারার পর তার আর মনে নেই যে মোট কতজনকে সে মেরেছে।

১৮১ বছর ধর জারে রাখা থাকে দিয়েগোর মাথা 

যখন এই বিষয়টি সামনে আসে তখন গোটা পর্তুগাল চমকে যায়। কারণ পর্তুগালে হিস্ট্রিতে এত বড় সিরিয়াল কিলার তারা আজ পর্যন্ত কখনও দেখেনি। শহরে হইচই শুরু হয়। লোকেরা তাদের নিয়ে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত ছিল। আদালত খুব দ্রুত মামলা শুরু করে দেয়। ১৮৪১ সালে দিয়েগোকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। যখন তার ফাঁসির তারিখ ঠিক হয়, কিছু চিকিৎসক আদালতের কাছে এবং এবং সরকারের কাছে দিয়ে দিয়েগোর মস্তিষ্ক রিসার্চের জন্য নিজেদের কাছে রাখার অনুমতি চায়। তারা জানায় যে এই ধরনের সিরিয়াল কিলারের মাথায় কি ধরনের চিন্তাভাবনা চলে তা জানতে চায়। সরকারি অনুমতি দেয় রিসার্চের পরে দিয়েগোর মাথা ইউনিভার্সিটি অফ লিসবনের মিউজিয়ামে রাখা হয়। আজ এ বিষয়টি ১৮১ বছর পার হয়ে গিয়েছে মাথাও সেভাবেই রয়েছে।

 

Read more!
Advertisement
Advertisement