পরমাণু চুক্তি নিয়ে এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিলেন ইরানকে। সাফ জানালেন, ইরান যদি পরমাণু চুক্তিতে রাজি না হয় তাহলে বোমা হামলা করা হবে। এমনকী তাদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হবে।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এনবিসি নিউজের সঙ্গে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে ইরান যদি চুক্তিতে না পৌঁছায় তবে বোমা হামলা হবে। তিনি এও জানান, 'ইরান যদি চুক্তি না করে তাহলে আমি ফের শুল্ক আরোপ করব। যেমনটা চার বছর আগে করেছিলাম।'
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকেও মুক্তি পায় সেই দেশ। পরে ট্রাম্প ইরানের উপর কঠোর আমেরিকান নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন, যা ইরানের অর্থনৈতিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এদিকে ট্রাম্প হুমকি দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ইরান ওমানের মাধ্যমে ট্রাম্পের চিঠির জবাব পাঠিয়েছে। চিঠিতে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে নতুন পরমাণু চুক্তির আবেদন করেছিলেন। ট্রাম্পের এই হুমকি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত,২০১৮ সাল থেকে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। গাজায় ইজরাইল-হামাস সংঘর্ষের সময় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর নেতাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। বর্তমানে, আমেরিকা ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের উপর বিমান হামলা চালাচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতকে আরও জটিল করেছে। এ ছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ইরান যদি তার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কোনও সমাধান না পায়, তাহলে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো কঠোর পদক্ষেপ করতে পারে।
২০২০ সালে ট্রাম্প জমানাতেই নিহত হন ইরানের কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানি। সেবছরের ৩ জানুয়ারি ট্রাম্পের নির্দেশেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলা হয়। সোলেমানি-সহ প্রাণ যায় ৮ জনের। পালটা মার্কিন সেনাঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছিল ইরানের সেনা।