রাষ্ট্রসঙ্ঘে একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদতে ত্রুটি না এর নেপথ্যে রয়েছে কোনও ষড়যন্ত্র? সিক্রেট সার্ভিসকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ক্ষুব্ধ ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, 'রাষ্ট্রসঙ্ঘে গতকাল চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে আমায়। একবার নয়, দু'বার নয়, তিন তিন বার অশুভ ঘটনা ঘটেছে আমার সঙ্গে।' তাঁর এই সফরে একাধিকবার দুর্ঘটনার হাত থেকে বরাতজোরে রক্ষা পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
প্রথম ঘটনার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প লেখেন, 'স্টিলের ওই এসক্যালেটারে চড়ার সময়ে সেটি আচমকাই বন্ধ হয়ে যায়। ভাগ্যিস আমি আর মেলানিয়া পড়ে যাইনি। হ্যান্ডরেল শক্ত করে ধরছিলাম বলে আমাদের কিছু হয়নি। নচেৎ বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।' এই ঘটনাকে তিনি 'যড়যন্ত্র' হিসেবেই দেখছেন বলে জানিয়েছেন। লন্ডন টাইমসের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে তিনি জানান, এর আগে একবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের কর্মীরা এসক্যালেটার বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে মজা করেছিল।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে আচমকাই তাঁর টেলিপ্রম্পটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, 'পাথরের মতো স্তব্ধ হয়ে গেল'। ট্রাম্পের কথায়, 'প্রথমে এসক্যালেটার বন্ধের ঘটনা আর তারপর টেলিপ্রম্পটার বন্ধ হয়ে যাওয়া। কীরকম জায়গা এটা?' প্রায় ১৫ মিনিট পর চালু হয় ট্রাম্পের টেলিপ্রম্পটার। যদিও তাঁর ভাষণের ভূয়সী প্রশংসা হয়েছে বলেই দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
ট্রাম্পের আরও অভিযোগ, অডিটোরিয়ামে সাউন্ড সিস্টেমও গড়বড় করছিল। তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে যা যা বলছিলেন তা বাকি রাষ্ট্রনেতারা কেউই সঠিক ভাবে শুনতে পারছিলেন না বলে দাবি। ট্রাম্প বলেন, 'ভাষণ শেষ করার পর আমি মেলানিয়ার দিকে প্রথম তাকাই। ও আমায় জানাল, একটা কথাও নাকি শোনা যায়নি। এটা কাকতালীয় হতে পারে কি? তিন তিনবার ষড়যন্ত্র করা হল আমার বিরুদ্ধে।'
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া নিয়ে শীঘ্রই রাষ্ট্রসঙ্ঘের সেক্রেটারি জেনারেলকে তিনি চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিক্রেট সার্ভিসও তদন্ত করবে গোটা সফরের।
এদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, 'আমেরিকার প্রতিনিধিদলের মধ্যেই এক ভিডিওগ্রাফার ট্রাম্প এবং মেলানিয়ার আগে এসক্যালেটারে উঠেছিলেন তাঁদের রেকর্ড করবেন বলে। সম্ভবত সে-ই ভুলবশত সেফটি ফাংশন অন করে ফেলেছিল।' তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই যুক্তি মানতে নারাজ ট্রাম্প প্রশাসন।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিয়াভিট এই ঘটনাকে 'মেনে নেওয়া যায় না' বলে উল্লেখ করেছেন। এটা নিছক একটি যান্ত্রিক ত্রুটি নয় বলেই মত তাঁর। ক্যারোলাইন লিয়াভিটের বক্তব্য, 'কেউ যদি রাষ্ট্রসঙ্ঘে ইচ্ছাকৃত ভাবে এসক্যালেটার বন্ধ করে দেয়, ঠিক যখন ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি সেটিতে পা রেখেছেন, সেই ব্যক্তিকে অবিলম্বে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত।'