Wonder Village Of France Landes:পৃথিবীতে এমন একটা গ্রাম এবং শহর রয়েছে, যা গোটা পৃথিবীর চেয়ে আলাদা। এখানে নিজেদের নিয়ম চলে এবং গোটা গ্রামটাই একটা অদ্ভুত। দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের ল্যান্ডসে একটা অদ্ভুত গ্রাম। অদ্ভুত এ কারণে, কারণ এখানে থাকা বাসিন্দারা প্রত্যেকেই সব কিছু ভুলে যান। প্রত্যেকের রয়েছে ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমার।
বিনা পয়সায় থাকেন বাসিন্দারা
এই লান্ডেস গ্রামের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির বয়স ১০২ বছর। যেখানে সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তির বয়স ৪০ বছর। গ্রামে মূল রাস্তার চৌরাহাতে একটা জেনারেল স্টোর আছে। যেখানে সমস্ত জরুরি জিনিস পাওয়া যায়। কিন্তু এখানে কোনও পয়সা লাগে না। এই কারণে নিজের পকেটে পার্স মনে করে রাখার প্রয়োজন পড়ে না। বিনা পয়সার এই দোকানে রেস্তোরাঁর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাসীদের থিয়েটারে যাওয়া এবং অন্যান্য অ্যাক্টিভিটিতে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
এক্সপেরিমেন্ট গ্রাম
পরীক্ষামূলক এই গ্রাম ভিলেজ ল্যান্ডেস এক প্রকারের এক্সপেরিমেন্ট গ্রাম। অর্থাৎ এই গ্রাম এই এক্সপেরিমেন্টের জন্য বসানো হয়েছে। যাতে অ্যালজাইমার বা ডিমেনশিয়াপীড়িত লোকেদের প্রত্যেকটা জিনিস মনে রাখার বা ভুলে যাওয়ার কষ্ট থেকে তাদের সুস্থ করে তুলতে সাহায্য হতে পারে। এই এক্সপেরিমেন্ট বোর্ডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চরা একটি দল গবেষণা করছেন এবং এর নেতৃত্বে রয়েছেন প্রফেসর হেলেন আমিবা। তিনি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা এবং রোগের গতিবিধি ও প্রগ্রেসের উপর নজরদারি রাখছেন। প্রত্যেক ছয় মাসে তিনি যান। বিবিসি গ্রামের একটি সফর করে এবং রিপোর্ট দিয়েছে যে, এই গ্রামে কেনাকাটা থেকে শুরু করে সাফাই পর্যন্ত কোনও সময় ফিক্সড নেই। গ্রামবাসীদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে যে, তারা সব কিছু নিজের ইচ্ছে মতন করতে পারবেন।
যতজন বাসিন্দা রয়েছেন ততজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। প্রফেসার আমিবার বক্তব্য যে এই লোকেদের নিজেদের পরিবার এটা জেনে খুশি হন যে তাঁদের লোকেরা সুরক্ষিত রয়েছেন এবং বিনা কোনও মন খারাপ বা সমস্যা, তাঁরা দিব্যি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তিনি বলেছেন এই রোগের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এই গ্রামে প্রায় ১২০ জন বাসিন্দা রয়েছেন এবং এতজনই স্বাস্থ্য কর্মীও রয়েছেন।
সরকারও অর্থ সাহায্য করছে
এই গ্রাম এক বাসিন্দার মেয়ে ডমিনিক জানিয়েছেন যে, আমার মানসিক প্রশান্তি রয়েছে। কারণ আমি জানি আমার মা এখানে শান্তিতে রয়েছেন। খুব সুরক্ষিত রয়েছেন। আমার এখানে তাঁকে ছেড়ে গেলে মানসিক শান্তি মেলে। যখন আমি যাই তখন এমন মনে হয় যে তাঁদের ঘরেই রয়েছি। মার সঙ্গেই রয়েছি। এই গ্রামের বাসিন্দাদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা বা ২৪৩০০ ইউরো বাৎসরিক চার্জ দিতে হয়। যদিও ফ্রান্স সরকার এই গ্রামের স্থাপনার জন্য খরচ করেছে ১৭ লক্ষ ইউরো।