শনিবার মধ্যরাতে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়াও খালিস্তান গণভোটের পোস্টার মন্দিরের প্রধান দরজায় সাঁটানো হয়েছে। ভাঙচুরের এই কাজ মন্দির চত্বরে লাগানো সিসিটিভিতেও ধরা পড়েছে। যাতে দেখা যায় মন্দিরে দুজন লোক আসে। দুজনেই মুখ ঢেকে রেখেছে। নীল পাগড়ি পরা লোকটি মন্দিরের প্রধান দরজায় খালিস্তানি গণভোটের পোস্টার লাগায় এবং তারপর তারা দুজনেই সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
১৮ জুন কানাডায় খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ভারত সরকার তাকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছিল। সম্প্রতি ভারত সরকার ৪১ জন সন্ত্রাসবাদীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে হরদীপ নিজ্জারের নামও রয়েছে। হরদীপ নিজ্জার কানাডার সারেতে গুলিবিদ্ধ হন, তার পরে তিনি মারা যান। তিনি কানাডিয়ান শিখ সংগঠন শিখ ফর জাস্টিসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলার বাসিন্দা ছিলেন। ওই এলাকারই এক হিন্দু পুরোহিতকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ ছিল নিজ্জারের বিরুদ্ধে। সেই জন্য তাঁর মাথার দাম ১০ লাখ টাকা ঘোষণা করেছিল এনআইএ। NIA-এর মতে, পুরোহিতকে হত্যার ষড়যন্ত্র খালিস্তান টাইগার ফোর্স (KTF) করেছিল।
মন্দিরে হামলার ঘটনা অতীতেও ঘটেছে
কানাডায় হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। একই ধরনের ঘটনা অতীতে বহুবার সামনে এসেছে, যখন মন্দিরে হিন্দু ও ভারত বিরোধী স্লোগান লেখা হয়েছে। এই বছরের এপ্রিলে অন্টারিও প্রদেশে শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছিল এবং ভারতবিরোধী স্লোগান লেখা হয়েছিল। পরে মন্দিরের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
গত এক বছরে মন্দিরে হামলা এবং দেওয়ালে আপত্তিকর স্লোগান লেখার ৬টিরও বেশি ঘটনা সামনে এসেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মন্দিরে ভারতবিরোধী স্লোগান লেখা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তান আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালেকে 'শহিদ' হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল।
মামলা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে
ভারতীয়দের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং ভারতবিরোধী কার্যকলাপ সংক্রান্ত মামলার তীব্র বৃদ্ধি ঘটেছে। ভারত সরকার এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য অনুরোধ করেছিল। কানাডা সরকারের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ধর্ম, যৌন নির্যাতন এবং জাতিগত সম্পর্কিত ঘৃণামূলক অপরাধ কানাডায় ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে, বিশেষ করে ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় বাড়িয়েছে।